সত্যি কি সৌদি আরবে এশিয়ান কাপ খেলার সামর্থ্য রাখেন হামজারা
Published: 26th, March 2025 GMT
ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য দাপুটে ড্রয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটায় আসামের গুয়াহাটি বিমানবন্দরের উদ্দেশে শিলং ছেড়েছেন ফুটবলাররা। বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া পাঁচটায় ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে তাঁদের।
ম্যাচ শেষে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা যেমন বলেছেন, বাংলাদেশ ২০২৭ এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার স্বপ্ন দেখছে, তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন তাবিথ আউয়ালও। বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে শিলংয়ে আসা বাফুফে সভাপতির দৃঢ় বিশ্বাস, এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠবে বাংলাদেশ।
শেষ বাঁশির পর সবাই যখন স্টেডিয়াম ছাড়ছেন, ঠিক সেই ভিড়ে মিশে ছিলেন বাফুফে সভাপতিও। বাংলাদেশ দলের খেলায় নিজের উচ্ছ্বাস জানিয়ে প্রথম আলোকে বললেন, ‘বাংলাদেশ দলের খেলা দেখে মনে হয়েছে, একটা ধারাবাহিকতা আমরা দেখাতে পেরেছি। গোটা দল দারুণ খেলেছে। এ ড্রয়ে আমরা এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করব আশ করি। আমাদের লক্ষ্য সেটাই এবং এই লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব মনে করি না।’
যদিও একটা ম্যাচ দেখেই সব বলে দেওয়া যায় না। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে আরও পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। সেই ম্যাচগুলোর ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে সবকিছু। তবে সকাল দেখলে দিনটা কেমন যাবে, সে নিয়ে হয়তো কিছুটা আন্দাজ করা যায়। সব সময় তা মিলে যায়, এমন নয়। তারপরও শুরুটা ভালো করতে পারা বাড়তি অনুপ্রেরণাই। বিশেষ করে গ্রুপের শীর্ষ দল ভারতের সঙ্গে তাদেরই মাঠে ড্র করাটা উজ্জীবিত হওয়ার মতোই।
আরও পড়ুনড্রয়ের আক্ষেপে অভিষেক হামজার১৩ ঘণ্টা আগেসিঙ্গাপুর-হংকংও ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। ফলে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এবং সময়মতো নিজেদের সেরাটা তুলে ধরতে পারলে বাংলাদেশের পক্ষেও এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া খুব কঠিন হবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, কাতার, চীন বা সৌদি আরবের মতো দল নেই, যাদের সঙ্গে বাংলাদেশ পেরে উঠবে না বলা যায় আগেই। ভারত ম্যাচের আত্মবিশ্বাস কোচ কাবরেরাকে এটাই বলছে, ‘চেষ্টা করব, তোমরা পারবে।’
এই যে এতগুলো গোল মিস করেছি আমরা, গোল মিস করে জিততে পারিনি, এই আফসোসটাই শিলং থেকে আমাদের বড় অর্জন। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা জেতার মতো খেলেছি।তাবিথ আউয়ালভারত, সিঙ্গাপুর, হংকং.
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম মিনিটেই গোল নষ্ট করেছে। গোল নষ্ট হয়েছে আরও কয়েকটি। প্রথমার্ধেই অন্তত চারটি গোল বাংলাদেশ পেতে পারত। এ নিয়ে সবার মুখে যে আক্ষেপ, সেটিকেই বাংলাদেশের প্রাপ্তি মনে করেন তাবিথ, ‘এই যে এতগুলো গোল মিস করেছি আমরা, গোল মিস করে জিততে পারিনি, এই আফসোসটাই শিলং থেকে আমাদের বড় অর্জন। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা জেতার মতো খেলেছি।’
বাংলাদেশ দলের রক্ষণভাগ দারুণ খেলেছে। হামজা চৌধুরীর উপস্থিতি এর একটা বড় কারণ। দারুণ অভিষেক হয়েছে তাঁর। পাশাপাশি আক্রমণভাগও ভালো খেলেছে। কিন্তু গোল আসেনি। আসেনি পুরো তিন পয়েন্ট। তা নিয়ে হতাশা থাকলেও বাফুফে সভাপতির চোখ আগামীতে, ‘খেলায় হারজিত আছে। অনেক সময় ভাগ্যও সহায় থাকতে হয়। এ ম্যাচে ভাগ্য আমাদের সঙ্গী ছিল না। তবে অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে একটা পয়েন্ট কিন্তু অনেক কিছু। ভারতের সঙ্গে আমরা দেশেও খেলব। তখন হোম সুবিধা নেব এবং অবশ্যই জিতব আশা রাখছি।’
কাল শিলংয়ে বাফুফে সভাপতিউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ড় ন ত পর ব ল দ শ দল র ল ম স কর আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।