ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য দাপুটে ড্রয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটায় আসামের গুয়াহাটি বিমানবন্দরের উদ্দেশে শিলং ছেড়েছেন ফুটবলাররা। বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া পাঁচটায় ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে তাঁদের।

ম্যাচ শেষে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা যেমন বলেছেন, বাংলাদেশ ২০২৭ এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার স্বপ্ন দেখছে, তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন তাবিথ আউয়ালও। বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে শিলংয়ে আসা বাফুফে সভাপতির দৃঢ় বিশ্বাস, এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠবে বাংলাদেশ।

শেষ বাঁশির পর সবাই যখন স্টেডিয়াম ছাড়ছেন, ঠিক সেই ভিড়ে মিশে ছিলেন বাফুফে সভাপতিও। বাংলাদেশ দলের খেলায় নিজের উচ্ছ্বাস জানিয়ে প্রথম আলোকে বললেন, ‘বাংলাদেশ দলের খেলা দেখে মনে হয়েছে, একটা ধারাবাহিকতা আমরা দেখাতে পেরেছি। গোটা দল দারুণ খেলেছে। এ ড্রয়ে আমরা এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করব আশ করি। আমাদের লক্ষ্য সেটাই এবং এই লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব মনে করি না।’

যদিও একটা ম্যাচ দেখেই সব বলে দেওয়া যায় না। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে আরও পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। সেই ম্যাচগুলোর ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে সবকিছু। তবে সকাল দেখলে দিনটা কেমন যাবে, সে নিয়ে হয়তো কিছুটা আন্দাজ করা যায়। সব সময় তা মিলে যায়, এমন নয়। তারপরও শুরুটা ভালো করতে পারা বাড়তি অনুপ্রেরণাই। বিশেষ করে গ্রুপের শীর্ষ দল ভারতের সঙ্গে তাদেরই মাঠে ড্র করাটা উজ্জীবিত হওয়ার মতোই।

আরও পড়ুনড্রয়ের আক্ষেপে অভিষেক হামজার১৩ ঘণ্টা আগে

সিঙ্গাপুর-হংকংও ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। ফলে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এবং সময়মতো নিজেদের সেরাটা তুলে ধরতে পারলে বাংলাদেশের পক্ষেও এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া খুব কঠিন হবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, কাতার, চীন বা সৌদি আরবের মতো দল নেই, যাদের সঙ্গে বাংলাদেশ পেরে উঠবে না বলা যায় আগেই। ভারত ম্যাচের আত্মবিশ্বাস কোচ কাবরেরাকে এটাই বলছে, ‘চেষ্টা করব, তোমরা পারবে।’

এই যে এতগুলো গোল মিস করেছি আমরা, গোল মিস করে জিততে পারিনি, এই আফসোসটাই শিলং থেকে আমাদের বড় অর্জন। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা জেতার মতো খেলেছি।তাবিথ আউয়াল

ভারত, সিঙ্গাপুর, হংকং.

..এই দলগুলো কাছাকাছি মানেরই। ফিফার তালিকায় বাংলাদেশ সবার পেছনে থাকলেও কালকের খেলায় সেটা বোঝা যায়নি। ফলে চূড়ান্ত পর্বের দৌড়ে বাংলাদেশকে রাখাই যায়। শেষটা কেমন হবে, সেটা সময়ই বলবে। এখন থেকে চেষ্টা তো করাই যায়।

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম মিনিটেই গোল নষ্ট করেছে। গোল নষ্ট হয়েছে আরও কয়েকটি। প্রথমার্ধেই অন্তত চারটি গোল বাংলাদেশ পেতে পারত। এ নিয়ে সবার মুখে যে আক্ষেপ, সেটিকেই বাংলাদেশের প্রাপ্তি মনে করেন তাবিথ, ‘এই যে এতগুলো গোল মিস করেছি আমরা, গোল মিস করে জিততে পারিনি, এই আফসোসটাই শিলং থেকে আমাদের বড় অর্জন। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা জেতার মতো খেলেছি।’

বাংলাদেশ দলের রক্ষণভাগ দারুণ খেলেছে। হামজা চৌধুরীর উপস্থিতি এর একটা বড় কারণ। দারুণ অভিষেক হয়েছে তাঁর। পাশাপাশি আক্রমণভাগও ভালো খেলেছে। কিন্তু গোল আসেনি। আসেনি পুরো তিন পয়েন্ট। তা নিয়ে হতাশা থাকলেও বাফুফে সভাপতির চোখ আগামীতে, ‘খেলায় হারজিত আছে। অনেক সময় ভাগ্যও সহায় থাকতে হয়। এ ম্যাচে ভাগ্য আমাদের সঙ্গী ছিল না। তবে অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে একটা পয়েন্ট কিন্তু অনেক কিছু। ভারতের সঙ্গে আমরা দেশেও খেলব। তখন হোম সুবিধা নেব এবং অবশ্যই জিতব আশা রাখছি।’

কাল শিলংয়ে বাফুফে সভাপতি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ড় ন ত পর ব ল দ শ দল র ল ম স কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ