যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতি ঠেকাতে মঙ্গলবার নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আদেশ অনুযায়ী, ভোট প্রদানে এখন থেকে পাসপোর্ট, জন্মসনদ বা কোনো নথির মাধ্যমে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেখাতে হবে। এছাড়া, নির্বাচনের দিন নির্ধারিত সময়ের পর ডাকযোগে আসা ভোট গণনা করতে নিষেধ করা হয়েছে ওই আদেশনামায়। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন সহায়তা পরিষদকে নির্দেশনা দিয়েছেন ট্রাম্প।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রাম্প নিয়মিতই মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হেরে যাওয়ার পর নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে দাবি করেন। এমনকি ভোটদান পদ্ধতির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে গিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করলেন ট্রাম্প। 

হোয়াইট হাউসে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘হয়তো কিছু লোক মনে করে আমার অভিযোগ করা উচিত নয়, কারণ আমরা গত নভেম্বরে বিপুল ভোটে জিতেছি। এটি নির্বাচনী কারচুপি বন্ধের পথে বড় একটি পদক্ষেপ। সামনে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যেন সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়। দেশ ভুয়া ও দুর্নীতিগ্রস্ত নির্বাচনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ যদিও গবেষকরা তাঁর এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, অভিবাসীদের দেওয়া ভুয়া ভোটের সংখ্যা খুবই অল্প।

ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ডেমোক্র্যাট ও প্রগতিশীলরা। তাদের অভিযোগ, নতুন আদেশের কারণে ভোট দিতে মানুষকে এখন থেকে পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন বা অন্য কোনো সরকারি নথি দেখিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে। জনস্বার্থ নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থা পাবলিক সিটিজেনের সহসভাপতি লিসা গিলবার্ট এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের আদেশকে ‘গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আক্রমণ’ এবং ‘একনায়কসুলভ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রচেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক সাফল্য

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কমায় একে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য।”

শুক্রবার (১ আগস্ট) এক অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শুল্ক হার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে আরোপিত শুল্ক হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।

তিনি বলেন, আলোচকরা এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নিরলসভাবে কাজ করে জটিল আলোচনাকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়েছেন। যেখানে শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এই চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি, বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তাবাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি ও আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ

কোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, এ অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না; বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল, উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আজকের সাফল্য আমাদের জাতীয় দৃঢ়তা ও আগামী দিনের আরো শক্তিশালী অর্থনীতির সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।

 

তথ্যসূত্র: বাসস

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ