‘নিষিদ্ধ’ ইরান কি বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবে
Published: 27th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে ফিরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত জানুয়ারিতে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর তাঁর প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
ট্রাম্প মূলত অভিবাসন নীতির ওপর বেশি জোর দিয়েছেন এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করেছেন। তাঁর প্রথম পদক্ষেপগুলোর একটি ছিল অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া। এ ছাড়া কিছু দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা অনেক আগে থেকেই আছে। সেই সংখ্যা এবার আরও বাড়ছে, যা ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
আগামী বছর বিশ্বকাপের ২৩তম আসর বসছে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায়। ৪৮ দলের এই বিশ্বকাপের বেশির ভাগ ম্যাচই হবে যুক্তরাষ্ট্রে।
কিন্তু ট্রাম্পের সরকার যেসব দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে কিংবা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, বিশ্বকাপে সেসব দেশের ফুটবল দল তাহলে কী করবে, কোথায় খেলবে—এ ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প সরকার যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার জন্য ৪৩ দেশের একটি তালিকা প্রস্তাব করেছে। দেশগুলোকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে—১) পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বা লাল তালিকাভুক্ত দেশ, ২) আংশিক বা কঠোর ভিসা স্থগিতাদেশ, ৩) আংশিক নিষেধাজ্ঞার জন্য সুপারিশকৃত দেশ।
আরও পড়ুনডোনাল্ড ট্রাম্প কোন ফুটবল ক্লাবের সমর্থক২১ জানুয়ারি ২০২৫তৃতীয় ক্যাটাগরিতে থাকা দেশগুলো ৬০ দিনের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে থাকা দেশগুলোর নাগরিককে শর্ত সাপেক্ষে বা বিশেষ বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু লাল তালিকাভুক্ত দেশের নাগরিককে কোনোভাবেই মার্কিন ভূখণ্ডে ঢুকতে দেবে না ট্রাম্প সরকার।
বিপত্তিটা এখানেই। ট্রাম্পের লাল তালিকাভুক্ত ১১ দেশের একটি ইরান, যারা এরই মধ্যে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। ইরান ছাড়াও পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছে আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ভুটান, কিউবা, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।
এশিয়ান অঞ্চলের দ্বিতীয় দল হিসেবে ২০২৬ বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠেছে ইরান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।