এনসিপিতে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই: আখতার হোসেন
Published: 27th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্বের সবাই এই দলের হাল ধরেছেন। এটি একক কোনো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় শোভাযাত্রা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন আখতার হোসেন।
সম্প্রতি এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে নিজ এলাকা পঞ্চগড়ে শোডাউনের পর দলটির দুই নেতা ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট করেন। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, যদি নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন, সেটি আমরা দলগতভাবে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করব। আমাদের দলের বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে কথাবার্তা নিয়ে অনেকের মনে হতে পারে দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতার জায়গা তৈরি হয়েছে, আসলে বিষয়টা এমন নয়।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, চব্বিশের আন্দোলনসহ বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ যে হত্যাযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়েছে, এর জন্য দলটির দেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি হচ্ছে ফ্যাসিবাদী শক্তি। তারা কখনও ইনক্লুসিভ নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন এনসিপির প্রস্তুতি সম্পর্কে আখতার হোসেন বলেন, দলের মুখ্য সংগঠকরা দেশব্যাপী কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন। এতে মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়াও মিলছে। অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনের নিবন্ধন পেতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি সেগুলো পূরণ করতে পারবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার রংপুরে আসেন আখতার হোসেন। দুপুরে নগরের সাতমাথা থেকে ভ্যানযোগে জনসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে তাঁর সংসদীয় এলাকা কাউনিয়া এবং পীরগাছার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দুই শতাধিক শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি দেউতি-কদমতলী-পীরগাছা সদর, কালীগঞ্জ পাওটানা হয়ে কাউনিয়ার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে টেপামধুপুর এলাকায় গিয়ে ইফতার মাহফিলে অংশ নেয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন আখত র হ স ন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।