ক্রেতা–বিক্রেতা উভয়ই খুশি ঢাকার যে মার্কেটে
Published: 27th, March 2025 GMT
রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে মিরপুর ১০ নম্বর, মেট্রোরেলে নিমেষেই চলে গেলাম। মেট্রো থেকে নামার পর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকের কাছে হোপ মার্কেট চেনেন কি না, জানতে চাইলে একটু বিরক্তই হলেন। বললেন, ‘এই এলাকায় থাকি, আর হোপ মার্কেট চিনব না?’
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ৩০ বছর বয়সী অটোচালক মো. সুজন জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ছোট ছেলে রিফাত ঈদের কেনাকাটার জন্য কান্নাকাটি শুরু করেছে। কেনাকাটা কোথা থেকে করবেন—জানতে চাইলে সুজন বললেন, ‘কই আর যামু? হোপ মার্কেট থেইক্যাই কিনাকাটা করমু। ছেলেদের জন্য পায়জামা, পাঞ্জাবি আর মেয়ের জন্য থ্রি–পিস কিনমু।’
হোপ মার্কেট থেকেই কেন কেনাকাটা করতে চাচ্ছেন, এ প্রশ্নে ময়মনসিংহের শেরপুর থেকে আসা অটোচালক সুজন বললেন, ‘ফুটপাতের হোপ মার্কেট হইল গরিবের মার্কেট। সস্তায় এইখান থেকে জিনিস কিনোন যায়। শোরুমে তো ঢুকনই যায় না।’
অটোচালক সুজন হোপ মার্কেটে নামিয়ে দিলেন। মিরপুর ১০ নম্বরের ব্লক বি–তে হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। হোপ মার্কেটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে মুখে যে গল্পটা প্রচলিত আছে তা হলো, স্কুলটিকে কেন্দ্র করে আশপাশের ফুটপাতে প্রায় ১৫ বছর আগে কয়েকটি দোকান ছিল। ক্রেতা ছিলেন মূলত স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। স্কুলসহ এ এলাকার আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও কেনাকাটা করতেন। কম দামে ভালো পণ্য পাওয়া যায় বলে আস্তে আস্তে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। মার্কেটের বিস্তৃতিও বাড়তে থাকে।
এখন ১০ নম্বর গোলচত্বর পার হলেই (মিরপুর ১৪ নম্বরের দিকে যেতে) অসংখ্য দোকান। কেউ ভ্যানে জিনিস নিয়ে বসেছেন। কেউ দোকান বানিয়ে বসেছেন। আর অনেকে সড়কে মোটা পলিথিন বিছিয়ে সেখানেই পণ্য সাজিয়ে বসেছেন। আবার কেউ নিজের শরীরকেই হ্যাঙ্গার বানিয়ে গামছা, বালিশের কভারসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছেন।
একটু পরপর ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য ‘আড়াই শর গেঞ্জি লন দেড় শ টাকায়’; ‘ওই কী রে, ওই কী রে’; ‘চলছে বিশাল ডিসকাউন্ট’; ‘দামাদামি করতে চাইলে ফার্মগেট চইলা যান’—এমন হাঁকডাক দিচ্ছিলেন বিক্রেতারা।সময় গড়াতে থাকে, আর হোপ মার্কেটে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। বিক্রেতারা জানালেন, মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর এ মার্কেটে ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। অ্যাপ্রন পরা চিকিৎসক, গলায় আইডি কার্ড ঝোলানো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অফিসফেরত নারী-পুরুষ—এমনকি কেউ কেউ কয়েক মাস বয়সী সন্তানকে পাতলা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে নিয়ে মার্কেটে এসেছেন। ক্রেতাদের মধ্যে নিম্নবিত্তদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। বিক্রেতাদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যা বেশি। নারী ও শিশু বিক্রেতাও আছে।
বিকেল হলে হোপ মার্কেটে বেড়ে যায় ক্রেতাদের ভিড়। আজ বৃহস্পতিবার মিরপুর ১০ নম্বরে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
‘মাস্তান’কে ছাড়া রিয়ালের অ্যানফিল্ড–অভিযান এবং সালাহর রেকর্ডের হাতছানি
অ্যানফিল্ডে যাওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ দুঃসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের বিপক্ষে আজ রাতে খেলতে পারবেন না ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। দলের মেডিকেল বিভাগ জানিয়েছে, আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার ভুগছেন ‘স্পোর্টস হার্নিয়া’-তে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা লিখেছে, মাস্তানতুয়োনো কবে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজকের ম্যাচে তাঁর না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত।
গতকাল অনুশীলনেও ছিলেন না মাস্তানতুয়োনো। সাধারণত প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করে রিয়াল। কিন্তু এবার কোচ জাবি আলোনসো একটু ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। অ্যানফিল্ডে সাংবাদিকদের সামনে কৌশল প্রকাশ না করে তিনি শেষ অনুশীলন সেরেছেন ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ভালদেবাসে। মার্কার বিশ্লেষণ, প্রতিপক্ষ যেন শেষ মুহূর্তে কিছু বুঝে না ফেলে, সে জন্যই আলোনসোর এ সিদ্ধান্ত।
রিয়ালের বর্তমান ফর্ম অবশ্য কোনোভাবেই লুকানো যাচ্ছে না। লা লিগায় গত পরশু রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে এটি তাদের ১৩তম জয়। একমাত্র হারের স্বাদ লিগে। ১২৬ বছরের ইতিহাসে রিয়ালের এর চেয়ে ভালো সূচনা হয়েছে মাত্র দুবার, সর্বশেষ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে।