ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদ ঘোষণা ঘিরে নানা মহলের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন ইশরাক হোসেন। বলেছেন, ভোটে তিনি হারেননি তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০২০ সালের অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরই আইন মেনে তিনি মামলা করেছিলেন। সেই মামলা তখন ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ৫ বছর আইনি লড়াইয়ের পর তিনি এখন ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইশরাক হোসেন এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রিকশা ভ্যান ও অটো চালকদের মাঝে ঈদ উপহার দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটি।

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গতকাল রায় দিয়েছেন আদালত। ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.

নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।

ইশরাক হোসেনের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রার্থী ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলা করা হয়, ইভিএম মেশিনে ভোট জালিয়াতি করা হয়, নির্বাচনে ভোটারদের ভোটগ্রহণে বাধা দেওয়া হয়, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি করা হয়। এতসব জালিয়াতির পরেও নির্বাচন কমিশন শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র ঘোষণা করে। নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ৩ মার্চ ইশরাক হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালত পূর্ণাঙ্গ শুনানি নিয়ে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করেছেন।

আজকের অনুষ্ঠানে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর গতকাল রায় পেয়েছি। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে এই রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় কেউ কেউ বোঝার কমতি থাকার কারণে যে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন তাদের জানার ক্ষেত্রে কিছু তথ্যের ঘাটতি রয়েছে।’

পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেকেই হয়তো মনে করছে যে ৫ আগস্ট ২০২৪ এ পর এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বা আমরা হয়তো এরপরে এসে (২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর) এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ করতে হয় এবং সেই ৩০ দিনের মধ্যেই মামলাটি করা হয়েছিল। পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে এই মামলাটি নিষ্পত্তি হওয়ার আইনি বিধান থাকলেও বিগত ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের আমলে এটিকে বাধাগ্রস্ত করা হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী তাপস এই মামলা বাতিল করার জন্য উচ্চ আদালতে এবং নিম্ন আদালতে চাপ প্রয়োগ করেছেন। উচ্চ আদালতে আবেদন করে মামলার শুনানি বন্ধ করে রেখেছিলেন।’

পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর ওই মামলার শুনানি করে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করেই মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন জানিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এই মামলায় সাক্ষী শুনানি হয়েছে, যুক্তিতর্ক হয়েছে এবং পরবর্তীতে গতকাল কাঙ্ক্ষিত রায় দেওয়া হয়েছে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রিকশা ভ্যান ও অটো চালকদের মাঝে ঈদ উপহার দেওয়ার আয়োজন করা হয়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন ২০২০ স ল ব এনপ র পরবর ত অন ষ ঠ র আইন

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি

বিগত শতকের ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫, এই দুই দশক ছিল দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসের খুবই তাৎপর্যময় ঘটনাবহুল সময়। একই সঙ্গে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলেও এই কালপর্বে সমাজতন্ত্রের পতনসহ এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যা মানুষের বিশ্বাস, আদর্শ, চিন্তা, অভিব্যক্তি ও জীবনাচরণে নানাভাবে প্রভাব রেখেছে। শিল্পীদের ভাবনায় সমকাল কেমনভাবে তার সৃজনকলায় উদ্ভাসিত হয়েছিল, তার একঝলক দেখে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হলো কলাকেন্দ্রে।

গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন বিকেলে লালমাটিয়ার ডি ব্লকের ৯/৪ নম্বর বাড়ির কলাকেন্দ্রে শুরু হলো ‘ফিরে দেখা’ নামে ১৪ শিল্পীর যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী।

এই প্রদর্শনীতে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ পর্বে যাঁরা চারুকলার শিক্ষার্থী ছিলেন, তাঁরা পরবর্তীকালে ‘ঢাকা পেইন্টার্স’, ‘সময় গ্রুপ’সহ বেশ কিছু গোষ্ঠী গড়ে তুলেছিলেন। তাঁদের মধ্য থেকেই কাজী রাকিব, দীপা হক, ঢালী আল মামুন, দিলারা বেগম জলি, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য, সাইদুল হক জুইস, ফারেহা জেবা, রতন মজুমদার, হাবিবুর রহমান, রুহুল আমিন কাজল, লালা রুখ সেলিম, তৌফিকুর রহমান ও ওয়াকিলুর রহমানের প্রায় ৬০টি শিল্পকর্ম নিয়ে এই ‘ফিরে দেখা’ প্রদর্শনী।

শিল্পীরা মূলত আশি ও নব্বই দশকে যেসব কাজ করেছিলেন, তার কিছু কিছু নমুনা রয়েছে এখানে। অধিকাংশ কাজই শিল্পীদের ব্যক্তিগত সংগ্রহের। ছাপচিত্র, জলরং, ড্রয়িং, মিশ্রমাধ্যম, অ্যাক্রিলিকসহ বিভিন্ন মাধ্যমের চিত্রকলা ও ভাস্কর্য রয়েছে প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে।

কলাকেন্দ্রের প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রচলিত অর্থে কোনো প্রধান বা বিশেষ অতিথি থাকেন না। প্রদর্শনীর কাজ নিয়ে এক বা একাধিক আলোচক আলোচনা করেন। সূচনা বক্তব্যে কলাকেন্দ্রের পরিচালক শিল্পী ওয়াকিলুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে দুই দশকজুড়ে সমাজ ও সমকালীন ভাবনা ও মনোভাব শিল্পীদের কাজে যেভাবে প্রকাশ পেয়েছিল, তার একটি খণ্ডচিত্র এই প্রদর্শনীতে পাওয়া যাবে।

‘ফিরে দেখা’ প্রদর্শনীটির মূল আলোচক ছিলেন অধ্যাপক আবুল মনসুর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বিগত সময়ের শিল্পীদের কাজ দেখা ও পর্যালোচনার সুযোগ কম। সরকারিভাবেও তেমন উদ্যোগ নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম বিগত শিল্পীদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে জানতেই পারে না। দেশের ইতিহাসে ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ এক বিশেষ অধ্যায়। এ সময় রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের প্রভাব শিল্পকলায় প্রতিফলিত হয়েছিল। সে সময়ের তরুণ শিল্পীরা বৈশ্বিক ও স্থানীয় পরিবর্তন, ইতিহাস ঐতিহ্য, আপন সংস্কৃতিকে তাঁদের নিজেদের মতো করে ধারণ করেছিলেন। তাঁরা যে শিল্পভাষা, ভাবনা, উপকরণ, উপস্থাপনা নিয়ে কাজ করেছিলেন, পরবর্তীকালে তা আমাদের চিত্রকলায় এক নতুন গতিমুখ তৈরি করেছে। সেই তরুণদের অনেকেই তাঁদের কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। নিজের কাজে অনেক পরিণত হয়েছেন। খ্যাতি অর্জন করে বর্তমানে দেশের অন্যতম শিল্পী হয়ে উঠেছেন। পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের নানাভাবে পথ দেখিয়েছেন।’

শিল্পের আয়নায় অতীতকে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শকেরা এই প্রদর্শনীতে এলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশভাগ ত্রয়ী: শেকড়চ্যুত, ঠিকানাশূন্য মানুষের গল্প
  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • কুবিতে খেলার মাঠে মারামারির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • খুলনায় বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল, ভোলা সদরে কার্যক্রম স্থগিত
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
  • তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া
  • শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি