২৪ ঘণ্টায় ৩ কোটি টাকার বেশি টোল আদায়
Published: 28th, March 2025 GMT
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন পেশার মানুষ। দেশের দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা সেতুতে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার দিন সকাল থেকেই ভিড় বেড়েছে টোল প্লাজা এলাকায়। একদিনে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫০ টাকা।
আজ শুক্রবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। দুপুর থেকে এ পর্যন্ত চাপ কমে এসেছে। বিশেষত মোটরসাইকেলের ও যাত্রীবাহী বাসের চাপ বেশি দেখা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত সড়কপথে যানজট কিংবা ভোগান্তি না থাকায় স্বস্তির হাসি ফুটেছে মানুষের মুখে।
পদ্মা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ জানান, ঈদকে সামনে রেখে পদ্মা সেতুতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় টোল আদায় বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় টোল আদায়ও বেড়েছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫০ টাকা।
এ সময় মাওয়া প্রান্ত হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছে ১৭ হাজার ৩৩৫টি যানবাহন। জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পাড়ি দিয়েছে ১০ হাজার ৩৪৮টি যানবাহন। এছাড়া উভয় প্রান্তে চলাচল করেছে ২৭ হাজার ৬৮৩টি যানবাহন।
তিনি আরও জানান, ঈদ ঘিরে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া প্রান্তে যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। এ অবস্থায় রাজধানী থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখী যানবাহনগুলো নির্বিঘ্নে পদ্মা সেতু পার হচ্ছে।
এদিকে ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা এলাকায় সাতটি বুথে টোল আদায় করা হচ্ছে। তবে মোটরসাইকেলের জন্য বরাবরের মতোই এবারও টোল আদায়ের পৃথক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শ্রীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, ঈদ যাত্রায় পুরো এক্সপ্রেসওয়ের বড় চ্যালেঞ্জ টোল প্লাজার সামনে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ। শুক্রবার ভোর থেকে গাড়ির চাপ শুরুর পর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বৃদ্ধি পায়।
তিনি আরও জানান, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় হাইওয়ে পুলিশের আটটি ইউনিটসহ ৪০০ পুলিশ সদস্য কাজ করছে। এখন পর্যন্ত ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পদ ম স ত
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।