সুনামগঞ্জে রাতে নৌকা ডুবি, পাঁচজনের মৃত্যু
Published: 29th, March 2025 GMT
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় বৌলাই নদে যাত্রীবাহী নৌকা ডুবে দুই নারী ও তিন শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের বৌলাই নদের মদনাকান্দা গ্রামের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাত পৌনে ১২টায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা রাত সাড়ে ১০টায় খবর পেয়েছি। এখন ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। স্থানীয় সূত্রে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। এর মধ্যে দুজন নারী ও তিনজন শিশু।’
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাত্রী নিয়ে জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের মদনাকান্দা গ্রামে যাচ্ছিল। ঈদের কারণে নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। নৌকাটি বৌলাই নদ হয়ে মদনাকান্দা গ্রামের পাশে এসে তীরে ভেড়ার আগে ডুবে যায়। এ সময় অন্য যাত্রীরা তীরে উঠতে পারলেও ওই নারী ও শিশুরা উঠতে পারেনি। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নৌকাটির কোনো ছাদ ছিল না। খোলা নৌকায় করেই এ পথে যাত্রীরা যাতায়াত করেন। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণেই নৌকাটি ডুবেছে। মৃতদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, পরে বিস্তারিত জানা যাবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।