উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হচ্ছে। এদিন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন বেশির ভাগ মানুষ। কিন্তু এমন অনেক পেশার মানুষ আছেন, যাঁদের জন্য এই দিনটিও কাটছে কাজের ব্যস্ততায়। হাসপাতাল, থানা-পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, গণমাধ্যম, জরুরি পরিষেবা ও পরিবহন খাতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই আজ ঈদের দিনেও নিরবচ্ছিন্নভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেকে) হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন। জরুরি বিভাগে রোগী ও স্বজনদের ভিড় রয়েছে। বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও হামলায় আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে আসছেন স্বজনেরা। আর তাঁদেরই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা চিকিৎসকেরা নিয়মিতই পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করি। সে অনুযায়ী ঈদের দিনেও হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মীদের রোগীদের সেবা করতে হয়। এই সেবার মাঝেই আমাদের ঈদের আনন্দ।’

জরুরি বিভাগে সকাল থেকে আটজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন জানিয়ে আবদুর রহমান আরও বলেন, এ বিভাগের বেশির ভাগ চিকিৎসক কাজে রয়েছেন। আজ ঈদের দিনেও বিভিন্ন দুর্ঘটনা, মারামারি ও হামলায় গুরুতর আহত হওয়া অনেককে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। ফাঁকা রাস্তায় অনেকে বেপরোয়া যানবাহন কিংবা মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছেন।

জরুরি বিভাগে স্ট্রেচারে শুইয়ে রাখা হয়েছিল মিশুক চালক ইমরান মিয়াকে। রামপুরার মেরাদিয়া এলাকায় তিনি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ প্যাঁচানো ছিল।

রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা দিতে ঈদের দিনেও মাঠে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। ঢাকা, ৩১ মার্চ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদ র দ ন ও চ ক ৎসক দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ