ঈদের দিনও কাজের ব্যস্ততায় কাটে যাঁদের
Published: 31st, March 2025 GMT
উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হচ্ছে। এদিন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন বেশির ভাগ মানুষ। কিন্তু এমন অনেক পেশার মানুষ আছেন, যাঁদের জন্য এই দিনটিও কাটছে কাজের ব্যস্ততায়। হাসপাতাল, থানা-পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, গণমাধ্যম, জরুরি পরিষেবা ও পরিবহন খাতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই আজ ঈদের দিনেও নিরবচ্ছিন্নভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেকে) হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন। জরুরি বিভাগে রোগী ও স্বজনদের ভিড় রয়েছে। বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও হামলায় আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে আসছেন স্বজনেরা। আর তাঁদেরই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা চিকিৎসকেরা নিয়মিতই পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করি। সে অনুযায়ী ঈদের দিনেও হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মীদের রোগীদের সেবা করতে হয়। এই সেবার মাঝেই আমাদের ঈদের আনন্দ।’
জরুরি বিভাগে সকাল থেকে আটজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন জানিয়ে আবদুর রহমান আরও বলেন, এ বিভাগের বেশির ভাগ চিকিৎসক কাজে রয়েছেন। আজ ঈদের দিনেও বিভিন্ন দুর্ঘটনা, মারামারি ও হামলায় গুরুতর আহত হওয়া অনেককে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। ফাঁকা রাস্তায় অনেকে বেপরোয়া যানবাহন কিংবা মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছেন।
জরুরি বিভাগে স্ট্রেচারে শুইয়ে রাখা হয়েছিল মিশুক চালক ইমরান মিয়াকে। রামপুরার মেরাদিয়া এলাকায় তিনি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ প্যাঁচানো ছিল।
রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা দিতে ঈদের দিনেও মাঠে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। ঢাকা, ৩১ মার্চ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদ র দ ন ও চ ক ৎসক দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?