মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি তৃতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে রসিকতা করছেন না। তবে এ বিষয়ে এখনো চিন্তা করার সময় আসেনি। গতকাল রোববার তিনি এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে তৃতীয় মেয়াদে প্রার্থিতা করা সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ।

ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। এনবিসি নিউজকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলেছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘না, আমি মজা করছি না। আমি মজা করছি না; কিন্তু এটা নিয়ে ভাবার এখনই সময় নয়।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট তৃতীয় মেয়াদে প্রার্থিতার বিষয়ে বলেন, ‘এমন কিছু পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে আপনি এটি করতে পারেন।’ তবে নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

মার্কিন সংবিধানের ২২তম সংশোধনী অনুসারে, একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট টানা বা বিরতি দিয়ে চার বছর করে দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।

সাংবিধানিক সংশোধনী বাতিলের প্রস্তাবের জন্য কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট এবং আইনসভায় ৫০টি মার্কিন রাজ্যের তিন-চতুর্থাংশের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।

ট্রাম্পের কিছু মিত্র ২০২৮ সালের পরেও ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে রাখার ধারণাটি তুলে ধরেছেন এবং তিনিও বেশ কয়েকবার এমনভাবে এই ধারণা তুলে ধরেছেন, যা তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের খোঁচা দেওয়ার মতো বলে মনে হয়েছে।

ট্রাম্প ৭৮ বছর বয়সে দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি যদি ২০২৮ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের পর আরও চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন, তবে তার বয়স হবে ৮২ বছর।

১৭৯৬ সালে জর্জ ওয়াশিংটন দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার নজির স্থাপন করেছিলেন। ১৯৪০ সালে ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৪০ বছরের বেশি সময় ধরে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার ধারা বজায় ছিল। রুজভেল্ট এই ধারা ভেঙে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে চতুর্থ মেয়াদের কয়েক মাসের মধ্যে তিনি মারা যান। এর ফলে ১৯৫১ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রার্থিতার সীমা সংশোধনের পথ প্রশস্ত হয়।

ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের উপদেষ্টা স্টিভ ব্যানন ১৯ মার্চ নিউজ ন্যাশনে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ট্রাম্প ২০২৮ সালে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে তাঁর বিশ্বাস। তিনি বলেন, এটি কীভাবে সম্ভব হবে, সে উপায় খুঁজছেন তিনি ও অন্যরা।

তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচন করতে চাওয়ার সুযোগ রয়েছে ট্রাম্পের করা এমন মন্তব্যে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট পার্টি ও তাঁর নিজ দল রিপাবলিকান পার্টি থেকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র স ড ন ট পদ

এছাড়াও পড়ুন:

অলিম্পিকে ক্রিকেট: খেলতে না পারার শঙ্কায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড

সোয়া শ বছরের বিরতির পর ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট। ছেলে ও মেয়েদের ইভেন্টে খেলবে ছয়টি করে দল। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) অলিম্পিকের জন্য ছয় দল চূড়ান্তের যে প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।

অলিম্পিকের অংশগ্রহণকারী দল নির্বাচনের যে পদ্ধতি, তাতে পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার মতো দলগুলোর খেলার সুযোগ অতি সীমিত। অনিশ্চয়তা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের কোনো দলের অংশগ্রহণও। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসি বার্ষিক সভায় অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশির লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক নিয়ে আলোচনা হয়। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, সভার পর আইসিসি অলিম্পিকের ছয় দল নির্ধারণের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী এশিয়া, ওশেনিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার শীর্ষ র‍্যাঙ্কিংয়ের দলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। আর স্বাগতিক হিসেবে সুযোগ পাবে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি থাকা ৬ নম্বর জায়গাটি কীভাবে পূরণ হবে, সেটি পরে ঠিক হবে।

বর্তমান টি–টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিং অনুসারে এশিয়ার শীর্ষ দল ভারত (র‍্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর), ওশেনিয়ার সেরা অস্ট্রেলিয়া (র‍্যাঙ্কিংয়ে ২), ইউরোপের সেরা ইংল্যান্ড (র‍্যাঙ্কিংয়ে ৩) আর আফ্রিকার সেরা দল দক্ষিণ আফ্রিকা (র‍্যাঙ্কিংয়ে ৫)। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) চায় বিশ্বের সব অঞ্চল থেকে গেমসে প্রতিনিধিত্ব থাকুক। সেদিক থেকে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র আর চার মহাদেশের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানধারীর অংশগ্রহণ ‘বৈশ্বিক’ রূপই পায়।

আরও পড়ুনঅলিম্পিকে সোনার পদক জেতা শীর্ষ ১০ খেলোয়াড় কারা২৯ জুলাই ২০২৫

তবে ‘সেরা দলই অলিম্পিকে খেলবে’—এমন মানদণ্ড এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায় না। বর্তমানে আইসিসির পূর্ণ সদস্যদেশ আছে ১২টি। এর মধ্যে র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা পাঁচে থাকার পরও ওশেনিয়া অঞ্চলের নিউজিল্যান্ড (৪ নম্বরে) আঞ্চলিক র‍্যাঙ্কিং বাছাইয়ের কারণে অলিম্পিকে সুযোগ পাচ্ছে না। আবার যুক্তরাষ্ট্র (র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৭) স্বাগতিক হিসেবে অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সুযোগ পেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সম্ভাবনাও প্রায় শেষ বলা চলে।

অলিম্পিকে সাধারণত সার্বভৌম দেশ অংশগ্রহণ করে থাকে। ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে যে দলটি খেলে থাকে, সেটি মূলত ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর খেলোয়াড় নিয়ে গড়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড আঞ্চলিক বাছাইয়ের মাধ্যমে যেকোনো একটি দেশকে অলিম্পিকে পাঠাতে চায়, যেমনটা হয়েছে ২০২২ কমনওয়েলথ গেমসের সময় (বার্বাডোজ খেলেছিল)। এবার যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিক খেললে আমেরিকা অঞ্চল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিনিধিত্ব আটকে যেতে পারে।

আরও পড়ুন১৩ দেশ মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তাহলে অলিম্পিক ক্রিকেটে খেলবে কোন দেশ১৬ মে ২০২৫

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি ২০২৮ অলিম্পিকে খেলার আশা মিইয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ (১০), পাকিস্তান (৮), শ্রীলঙ্কা (৭), আফগানিস্তানের (৯) মতো দলগুলোরও। গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, অলিম্পিকে খেলার সুযোগ হাতছাড়া হতে চলায় অসন্তোষ জানিয়েছে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তবে আঞ্চলিক র‍্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে দল নির্ধারণের বিষয়টি এখনো আইসিসি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেনি। যদিও সংশোধনের সম্ভাবনা কমও বলে লিখেছে গার্ডিয়ান।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়েদের ইভেন্টের ছয় দল ২০২৬ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে। 

অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত মাত্র একবারই ক্রিকেট খেলা দেখা গেছে। ১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকে গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যকার একমাত্র ম্যাচে জিতে সোনা জিতেছিল গ্রেট ব্রিটেন।

আরও পড়ুনছিলেন অলিম্পিক তারকা, এখন এফবিআইয়ের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায়০৯ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অলিম্পিকে ক্রিকেট: খেলতে না পারার শঙ্কায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড