যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘বেপরোয়াভাবে’ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছেন বলে এক দীর্ঘ বক্তৃতায় অভিযোগ করেছেন ডেমোক্র্যাট সিনেটর কোরি বুকার। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর এ বক্তৃতা সময়ের দিক থেকে প্রায় সাত দশকের রেকর্ড ভেঙেছে।

৫৫ বছর বয়সী নিউ জার্সির আইনপ্রণেতা কোরি স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বক্তৃতা শুরু করেন। থামেন ২৫ ঘণ্টা ৫ মিনিট পর। এ ম্যারাথন বক্তৃতায় তিনি ফেডারেল সরকারের আকার কমাতে (জনবল ও খরচ) যে ‘যুদ্ধ’ শুরু করেছেন, তা নিয়ে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্কের সমালোচনা করেন।

২০১৩ সালে প্রথম সিনেটর নির্বাচিত হওয়া কোরি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরে বেপরোয়া ও অসাংবিধানিকভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এমনকি এসব তছনছ করে দেওয়া হচ্ছে।’

২০১৩ সালে প্রথম সিনেটর নির্বাচিত হওয়া কোরি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরে বেপরোয়া ও অসাংবিধানিকভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এমনকি এসব তছনছ করে দেওয়া হচ্ছে।’

কৃষ্ণাঙ্গ সিনেটর কোরি বুকার দীর্ঘ বক্তৃতা করে এর আগে সাউথ ক্যারোলাইনার স্বতন্ত্র সিনেটর স্ট্রম থারমন্ডের রেকর্ড ভাঙেন।

১৯৫৭ সালের গ্রীষ্মে নাগরিক অধিকারবিষয়ক আইনের বিরুদ্ধে স্ট্রম থারমন্ড যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেটি ছিল ২৪ ঘণ্টা ১৮ মিনিটের। যদিও এর মধ্য দিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট বিল পাস হওয়া আটকাতে পারেননি। বিলটিতে কৃষ্ণাঙ্গ জনগণের ভোটাধিকারের ফেডারেল সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছিল।

দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করে ট্রাম্প প্রথম সপ্তাহেই শিক্ষা বিভাগসহ বিভিন্ন ফেডারেল সংস্থা বন্ধ করে দেওয়ার পদক্ষেপ নেন। বন্ধ করে দেন কংগ্রেসের অনুমোদন দেওয়া বিভিন্ন সরকারি খরচ। তাঁর নীতিমালা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে ফেডারেল আদালতগুলোর বাধা সৃষ্টির এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প তাঁর বিতর্কিত কর্মসূচিগুলোর বাস্তবায়ন আরও জোরালো করেন। তাঁকে সমর্থন দিচ্ছে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস। এরই ধারাবাহিকতায় লক্ষাধিক ফেডারেল কর্মীকে ছাঁটাই করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট ভোটারেরা।

আরও পড়ুনক্ষমতায় বসেই অনেক কিছু বদলে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ২১ জানুয়ারি ২০২৫

ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের পাশাপাশি নিজেদের দলের নেতাদের প্রতিও। এ নেতাদের মধ্যে আছেন শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাট সিনেটর চাক শুমার ও প্রতিনিধি পরিষদের শীর্ষস্থানীয় নেতা হাকিম জেফরি। তাঁদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণ, তাঁরা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তগুলো জোরালোভাবে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন না।

বক্তৃতার শেষ দিকে শুমার সিনেটর বুকারকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনি কি জানেন, আপনি রেকর্ড ভেঙেছেন?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এখন জানলাম।’ পরে টিস্যু দিয়ে চোখ মুছে আবার বক্তৃতা শুরু করেন।

আপনি কি জানেন, আপনি রেকর্ড ভেঙেছেন?চাক শুমার, ডেমোক্র্যাট সিনেটর

এদিকে বুকারের দীর্ঘ সমালোচনাকে নাকচ করে দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র।

বুকার নিউ জার্সির নিউআর্কের সাবেক মেয়র। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দল থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। সে বছর ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেনের কাছে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গতকাল এ বক্তৃতা দেওয়ার সময় বুকারের সহকর্মী সিনেটররা পর্যায়ক্রমে সিনেটকক্ষে প্রবেশ করেন এবং তাঁকে প্রশ্ন করেন। এ অবস্থায় তিনি তাঁর বক্তৃতা না থামিয়ে টানা চালিয়ে যান।

আরও পড়ুনশুল্ক নিয়ে কাল কী ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প২০ ঘণ্টা আগে

বক্তৃতায় বুকার বলেন, ‘ট্রাম্প–ভ্যান্স প্রশাসন আমাদের বিশৃঙ্খলার মধ্যে নিমজ্জিত করে চলেছেন। আমাদের মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ আমাদের মার্কান পরিবারগুলোর খরচ ও আতঙ্কই শুধু বাড়াবে।’

বুকারের বক্তৃতার শেষদিকে সিনেটকক্ষে তাঁর অধিকাংশ ডেমোক্র্যাট সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বিপরীত পাশে রিপাবলিকান সিনেটরদের আসনগুলো ছিল একেবারে ফাঁকা।

১৯৫৭ সালের গ্রীষ্মে নাগরিক অধিকারবিষয়ক আইনের বিরুদ্ধে স্ট্রম থারমন্ড যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেটি ছিল ২৪ ঘণ্টা ১৮ মিনিটের। যদিও এর মধ্য দিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট বিল পাস হওয়া আটকাতে পারেননি। বিলটিতে কৃষ্ণাঙ্গ জনগণের ভোটাধিকারের ফেডারেল সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছিল।

বুকার বলেন, ‘সব মার্কিনের জন্য এটি এক নীতিনৈতিকতার মুহূর্ত। এখানে বাম বা ডানের বিষয় নেই। এটি সত্য–মিথ্যার বিষয়।’ একপর্যায়ে বুকারের কণ্ঠ ধরে আসে। শেষমেশ বক্তৃতা থামান তিনি।

আরও পড়ুনবিশ্বশান্তির জন্য গ্রিনল্যান্ড দখল করা প্রয়োজন: ট্রাম্প২৯ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প বল ক ন র কর ড ভ ঙ বক ত ত য় র বক ত ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন

নাটক, সিনেমা কিংবা ওয়েব—সব প্ল্যাটফর্মেই তিনি সরব। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, এই অভিনেতা চাকরির ফাঁকে শুটিং করেন। একসঙ্গে দুই জায়গায় মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। এ কারণে দু–তিন মাস পরপরই সিদ্ধান্ত নেন, চাকরি ছাড়বেন। তাঁর এই চাকরি ছাড়ার কথা শুনলেই এখন সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন। এই অভিনেতার নাম মোস্তফা মন্ওয়ার। আজ তাঁর জন্মদিন।

এই অভিনেতা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, চাকরি ছাড়ার কথা তিন-চার মাস পরপর বলবেন—এটা সহকর্মীরা ধরেই নিয়েছেন। কারণ, শুটিংয়ে সময় দিতে হয়। অফিসেও দায়িত্ব পালন করতে হয়।

মোস্তফা মন্ওয়ার বলেন, ‘দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে আমি অভিনয় ও চাকরি একসঙ্গে করছি। অনেকবার চেয়েছি চাকরি ছেড়ে শুধু শুটিং শুরু করি। কিন্তু কোনোভাবেই এটা হচ্ছে না। অর্থনৈতিক কারণে অভিনয়কেই শুধু পেশা হিসেবে নিতে পারছি না। চাকরিও ছাড়তে পারছি না। এর আগে চার-পাঁচবার চাকরি ছেড়েছি। কিন্তু আবার চাকরিতেই ফিরতে হয়েছে। ছুটির দিনে পরিবারকে সময় দিতে পারি না। শুটিংয়ে যাই।’

মোস্তফা মন্ওয়ার। ছবি: ফেসবুক থেকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন