বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছেন লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা। লন্ডনে অবস্থানরত তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন আজ বুধবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজ (বুধবার) থেকে ম্যাডামের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী চার দিন তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। এ সময় তাঁর চিকিৎসকেরা (লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা) বাসায় তাঁকে দেখতে আসবেন।’

খালেদা জিয়ার এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক আরও বলেন, ‘কিছু পরীক্ষা করার জন্য হয়তো তাঁকে (খালেদা জিয়াকে) লন্ডন ক্লিনিকেও নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী কয়েক দিন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, যা চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে করা হচ্ছে।’

খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরতে পারেন জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসকেরা যেসব পরীক্ষা করতে বলেছেন, সেগুলোর রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এখানকার চিকিৎসকেরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন—কত দ্রুত ছুটি দেওয়া যায়।’

বিএনপির চেয়ারপারসন এখন কেমন আছেন জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ম্যাডামের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। মানসিকভাবে উনি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ভালো। মাচ বেটার।’

সম্প্রতি লন্ডনের একটি পার্কে খালেদা জিয়ার হুইলচেয়ারে বসা একটি ভিডিও ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) হুইলচেয়ারে করে জাস্ট তাঁকে (খালেদা জিয়া) গাড়ি থেকে নামিয়ে ঘোরানো হয়েছিল। শীত কম ছিল, সে জন্য কিছুক্ষণ ঘোরানো হয়েছিল। একটু মন ভালো লাগার জন্য তাঁকে স্থানীয় একটি পার্কে (সাউথ-ওয়েস্ট ইনার লন্ডনে) গাড়ি থেকে নামিয়ে ঘোরানো হয়েছিল এই আর কি। পার্কের নানা রঙের ফুল, বাগান দেখালে ম্যাডামের একটু ভালো লাগবে—এই চিন্তা করে এটা করা হয়েছিল।’

আরও পড়ুনপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার ঈদ উদ্‌যাপন৩০ মার্চ ২০২৫

তারেক রহমানের বাসায় থেকে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে লন্ডনে যান তিনি। গত ৮ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর পর থেকে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।

লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। ছেলে তারেক রহমানের বাসায় আনন্দঘন পরিবেশে সময় কাটছে তাঁর।

আরও পড়ুনসবাই মিলে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: খালেদা জিয়া০১ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র চ ক ৎসক র পর ক ষ হয় ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ