ঈদের ছুটিতেও সদর উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জরুরী সেবা চালু
Published: 3rd, April 2025 GMT
পবিত্র ঈদ উল ফিতরের সরকারি ছুটির দিনগুলোতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সেবাকেন্দ্র সমূহের জরুরী সেবা চলমান রয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ বিশেষ আগ্রহের সাথে সকল প্রদেয় সেবাসমুহ গ্রহণ করেন।
এবারের ঈদ-উল-ফিতরে দীর্ঘ নয় দিনের সরকারি ছুটি ছিল।এই দীর্ঘ বন্ধেও সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ক্লিনিক্যাল বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহে জরুরি সেবা কার্যক্রম অব্যাহত ছিলো।
উল্লেখ্য, অত্র উপজেলায় ৯ টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং ২ টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে।
উপজেলা কর্মকর্তাদের সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, এ সেবাকেন্দ্রসমূহে নিরাপদ প্রসবসেবা,প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা,গর্ভকালীন চেক-আপ ও গর্ভ-পরবর্তী চেক-আপ এর সকল প্রস্তুতি রয়েছে।
সাধারণত সরকারি ছুটির দিনে জরুরি সেবা ছাড়া সকল বহিঃর্বিভাগীয় সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ঈদের ২য় দিন জালকুড়ি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মঞ্জু আরা ১ টি সাধারণ প্রসব সম্পন্ন করেন। তাকে সহযোগিতা করেন দাই নার্স মণিমালা।
জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ৪ জনকে প্রসবপূর্ব এবং ১ জনকে প্রসব পরবর্তী সেবা প্রদান করা হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদী পদ্ধতি ইমপ্ল্যাননের জটিলতায় ২ জনকে সেবা প্রদান করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আম্বিয়া খাতুন ২ টি সাধারণ প্রসব সেবা প্রদান করেন।
এ সময় ফতুল্লা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সাবিকুন নাহার জানান,ছুটির দিনে চারজন গর্ভবতী মা এ,এন,সি সেবা নিয়েছেন।সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ঝুকিপূর্ণ গর্ভধারণ আছে কিনা যাচাই করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জনাব সজল আহমেদ জানান, সরকারি জরুরি সেবা এই ঈদের বন্ধেও অব্যাহত রাখার জন্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আমরা সচেষ্ট রয়েছি। স্থানীয়দের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে জানা যায়,তারা প্রসবসেবা সচল থাকায় সন্তুষ্ট।
এসময় সম্পূর্ণ সেবা প্রদান কার্যক্রম তদারকি করেছেন ডাঃ জাফরীন যোবায়রা সুরভী ( মেডিকেল অফিসার - এম সি এইচ - এফ পি)।
সকল কার্যক্রমে সার্বিকভাবে সহযোগিতা প্রদান করেন না.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ঈদ কল য ণ ক ন দ র র সদর উপজ ল র উপজ ল সরক র প রসব
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা. রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে।
গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।
পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা।
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়।
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।