শখের মোটরসাইকেলে প্রাণ গেল বাবা-মেয়ের
Published: 4th, April 2025 GMT
‘ভাই শখ করছিল মোটরসাইকেল। একটাই আদরের ভাই; তাই তো দুই বোন মিলে কিন্নে দেছিলাম। আজ ভাই তো শেষ, ম্যাইয়াডও শেষ। আরেক মা তো এখনো মেডিকেলে রে। মোটরসাইকেল আজরাইল হইয়া সব ক্যাইড়া নিল।’
আফরোজা ইয়াসমিনের আফসোস যেন থামছেই না। যশোরের পুলেরহাট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রুবেল গাজীর (৩৫) বড় বোন আফরোজা। ওই দুর্ঘটনায় রুবেলের বড় মেয়ে ঐশী আক্তারও (১০) নিহত হয়েছে। রুবেলের স্ত্রী জেসমিন সুলতানা (২৮) ও ছোট মেয়ে তায়েবা (৪) গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আজ শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে খুলনার খালিশপুর থানার বাস্তুহারা কলোনির ৫ নম্বর রোডের রুবেলদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বাসার ঠিক বিপরীত দিকের মক্কী-মাদানী জামে মসজিদে জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজা শেষে দুটি আলাদা পিকআপে করে বাবা-মেয়ের লাশ নেওয়া হয় গোয়ালখালী কবরস্থানে। গতকাল রাতেই যশোর থেকে রুবেল ও তাঁর মেয়ের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়।
রুবেলের মা হাজেরা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। একমাত্র ছেলে আর নাতনির এমন মৃত্যুতে কিছুতেই থামছে না তাঁর আহাজারি। প্রতিবেশীরা ভিড় করে আছেন তাঁদের বাড়িতে। কেউ সান্ত্বনা দিচ্ছেন, কেউ ফেলছেন চোখের পানি। কেউ আবার রুবেলের আহত মেয়ে আর স্ত্রীর খোঁজখবর নিচ্ছেন।
মূর্ছা থেকে একটু জ্ঞান ফিরলেই বিলাপ করছেন মা হাজেরা বেগম। বলছিলেন, ‘আমার বাপরে আইনে দাও। ও আমার কলজাডা। আমার বাপরে কেউ খারাপ বলে না, আমার বাবা কোনো দোষ করিনি। সবাই ভালো বলে। আমার সব শেষ হয়ে গেল।’
রুবেলের বড় বোন আফরোজা একে–ওকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছিলেন। বছর দুই আগে ভাইকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার আফসোস তার কিছুতেই কাটছে না।
বিলাপ করতে করতে আফরোজা ইয়াসমিন বলছিলেন, ‘ভাই তো চলে গেল রে। আল্লাহ ক্যামনে নিল আমার মায়েরে আর ভাইরে। কাল আসরের টাইমে খবর পাইছি ম্যাইয়া (ঐশী) নাই, অ্যাকসিডেন্ট। পরে তো দেখি ভাইও শেষ, মাইয়াও শেষ। আরেক মাইয়া আমার মা তো (তায়েবা) হাসপাতালে পাঞ্জা লড়তেছে। পা ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে। আপনারা কী দেখতে আইছেন। কী দেখবেন আর। সব তো শেষ!’
থেমে থেমে রুবেলের আহত মেয়েটার জন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছিলেন আফরোজা। আফরোজা বলছিলেন, ‘আল্লাহ তুমি তায়েবা মারে সুস্থ কইরা দাও। তোমরা সবাই আমার তায়েবা মার জন্য দোয়া করো। ভাইয়ের স্মৃতিডা যেন থাকে.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফর জ
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩
দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/রতন/মাসুদ