ফ্লোরিডায় নারীদের শৌচাগার ব্যবহার করায় ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
Published: 4th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় শৌচাগার ব্যবহার–সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এক ট্রান্সজেন্ডার নারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মাসে মার্সি রেইনটজেন নামের ওই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মানবাধিকার আইনজীবীরা বলছেন, তাঁদের জানামতে দেশজুড়ে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় পাস হওয়া ট্রান্সজেন্ডারদের শৌচাগার ব্যবহার–সংক্রান্ত বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করা হলো।
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের আইনসভার শৌচাগারে প্রবেশের আগে ওই ট্রান্সজেন্ডার কলেজশিক্ষার্থী ঘোষণা দেন, ‘আমি এখানে আইন ভাঙতে এসেছি’। পরে পুলিশ তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে সেখান থেকে বের করে আনে।
গ্রেপ্তারের হলফনামা অনুসারে, গত ১৯ মার্চ ২০ বছর বয়সী রাইনটজেন যখন ফ্লোরিডার টালাহাসিতে অবস্থিত আইনসভা ভবনে প্রবেশ করেন, তখন ক্যাপিটল পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং তাঁর ফেরার অপেক্ষা করছিল। তারা তাঁকে বলেছিল, হাত ধোয়ার জন্য নারীদের শৌচাগারে প্রবেশ করলে তাঁকে অনুপ্রবেশের সতর্কতা দেওয়া হবে। পরে তিনি সেখান থেকে চলে যেতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রেইনটজেনের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূতভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর সর্বোচ্চ ৬০ দিনের কারাদণ্ড হতে পারে। মে মাসে তাঁকে আদালতে হাজির হতে হবে।
রাইনটজেন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম এই আইনের অযৌক্তিকতা মানুষ বাস্তবে দেখুক। আমি যদি একজন অপরাধী হই, তাহলে আমার জন্য স্বাভাবিক জীবনযাপন করা এত কঠিন হবে, কারণ আমি হাত ধুয়েছি। এটা একেবারেই পাগলামি।’
যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ১৪টি অঙ্গরাজ্য সরকারি স্কুলে এবং কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য সরকারি ভবনে ট্রান্সজেন্ডার নারীদের জন্য নারীদের শৌচাগারে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে আইন করা করেছে। মাত্র দুটি অঙ্গরাজ্য—ফ্লোরিডা ও উটাহ এই আইনের লঙ্ঘনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে। গত বুধবার একজন বিচারক মনটনার নতুন শৌচাগার আইন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর প রব শ র আইন
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এতে একজন শিক্ষকসহ হোটেলের দুই কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম শিপন মিয়া (৩০)। তিনি বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামের মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক মিয়ার ছেলে। নবীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে।
গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এমরান হোসেন (৩৮) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী—উপজেলার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন মিয়া (২০) ও চরলাপাং গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে নুর আলম (১৮)। এমরান উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। তাঁর ভাই ঢাকায় কর্মরত পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেন।
বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মনেক ডাকাত এলাকাটা শেষ করে ফেলেছেন। তাঁর কারণেই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে। মনেক ডাকাতদের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে মনেক ডাকাতের ছেলে নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মোন্নাফ মিয়া ও তাঁর ছেলে শিপনের দীর্ঘদিন ধরে একক প্রভাব ছিল। তাঁদের সঙ্গে একই এলাকার থোল্লাকান্দি গ্রামের মিস্টার মিয়ার ছেলে আরাফাত মিয়ার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাত আনুমানিক নয়টার দিকে বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র একটি দল হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াসিন ও নুর আলম গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর আরাফাত ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান।
শিপনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নুরজাহানপুরে পৌঁছালে মোন্নাফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় এমরান হোসেনের কার্যালয়ে হামলা চালান। সেখানে এমরান গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাঁরা থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালালেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ, উভয় পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ কাউকেই শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়নি। তাঁদের হয়তো অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিপনের ওপর হামলাকারী আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেনের আত্মীয়। এ কারণেই এমরানের কার্যালয়ে গিয়ে হামলা এবং তাঁকে গুলি করা হয়েছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত শিপন ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন। শিপন ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে। ওই ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।