রংপুরে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৫
Published: 5th, April 2025 GMT
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় ভাড়াটিয়া ও দোকান মালিকের দ্বন্দ্বের জের ধরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর।
শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে বদরগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত উপজেলার রাজা রামপুর গ্রামের লাভলু মিয়া (৫০) কে মুমূর্ষু অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্য গুরুতর আহতেরা হলেন, বদরগঞ্জ উপজেলার বৈরামপুর গ্রামের মোক্তারুল (৪৫), পাঠানপাড়া গ্রামের মুন্নাফ (৫০), লোহানীপাড়া ইউনিয়নের শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও একই ইউনিয়নের ময়নাল হোসেন (২৫)। তাদেরও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
শরীয়তপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৬
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ
পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন এলাকার ঢেউটিন ব্যবসায়ী জাহিদুল হক জোয়ারদার একই এলাকার ইশতিয়াক বাবুর দোকান ঘর ভাড়া নেন। এই দোকান ভাড়া নেওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। জাহিদুল হক কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিকের কাছে বিষয়টি সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন। একই ঘটনায় ইশতিয়াক বাবু বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের কাছে বিচার চান। এ নিয়ে মোহাম্মদ আলী সরকার ও শহিদুল হক মানিকের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধে। শনিবার সকাল থেকে দুই গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ছোরা-বল্লম, তীর-ধনুক নিয়ে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে শহীদুল হক মানিকের লোকজন মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজনের ওপর হামলা করে। এতে পাঁচজন গুরুতর আহত হয়।
এর আগে, জাহিদুল হক জোয়ারদার দোকান খুলে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। পরে মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন তা ভেস্তে দেয়। এতে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এ দিন দুপুর ২টার দিকে সেনা এবং পুলিশ পৌর শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামে।
এ ঘটনায় বদরগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম আতিকুর রহমান জানান, সংঘর্ষে ৫-৬ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনা সদস্যরা পুলিশকে সহায়তা করছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/আমিরুল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ বদরগঞ জ উপজ ল হ দ ল হক স ঘর ষ সরক র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি