বিজ্ঞানী টেসলা সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন
Published: 6th, April 2025 GMT
মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম টেসলা। আর তাই টেসলা নামটির সঙ্গে আমরা অনেকেই বেশ পরিচিত। বিশ্বের অন্যতম বড় এই বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলার নামে।
ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলার বৈদ্যুতিক প্রকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সার্বিয়ান-আমেরিকান নিকোলা টেসলা বেশি খ্যাতি পেয়েছেন বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থায় এসি (অল্টারনেটিং কারেন্ট) উদ্ভাবন করে। টেসলার পেটেন্ট ও তাত্ত্বিক কাজ তারহীন যোগাযোগ ও রেডিও উদ্ভাবনের ভিত তৈরি করে দিয়েছে। টেসলা প্রথম বেতারনিয়ন্ত্রিত (আরসি) যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। টেসলাই প্রথম ব্যক্তি, যিনি এক্স-রে ছবি তুলেছিলেন।
জীবদ্দশায় কিছুটা আড়ালে থাকলেও টেসলার উদ্ভাবন আধুনিক পাওয়ার গ্রিডের ভিত্তি হিসেবে রয়ে গেছে। উনিশ শতকের শেষের দিকে টেসলার এসি সিস্টেম আরেক বিজ্ঞানী থমাস এডিসনের ডাইরেক্ট কারেন্টের (ডিসি) সঙ্গে বেশ প্রতিযোগিতা করে। তখন দুই বিজ্ঞানীর মধ্যে বেশ প্রতিযোগিতাও হয়েছিল। বিদ্যুৎ ছাড়াও বেতার শক্তি সঞ্চালনের প্রতি টেসলার আগ্রহ ছিল। এ ক্ষেত্রে তাঁকে কিংবদন্তি বলা হয়। তিনি এমন একটি বিশ্ব কল্পনা করেছিলেন, যেখানে বিদ্যুৎ বাতাসের মাধ্যমে সঞ্চালিত হবে। তিনি ওয়ার্ডেনক্লিফ টাওয়ার নামে একটি পরীক্ষামূলক বেতার শক্তি সঞ্চালন কেন্দ্র চালু করেছিলেন। সেটি ছিল তাঁর সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রচেষ্টার মধ্যে একটি। তবে শেষ পর্যন্ত আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তা সম্পূর্ণ করতে পারেননি টেসলা। স্মার্টফোন ও বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য বর্তমানে ব্যবহৃত ওয়ারলেস চার্জিং প্রযুক্তি টেসলার প্রাথমিক ধারণার ওপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে।
বিজ্ঞানী টেসলা বেতার যোগাযোগ, অটোমেশন, রোবোটিকসসহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো অনেক প্রযুক্তির ধারণা দিয়েছেন। ১৯২৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, একদিন মানুষ ছোট যন্ত্র বহন করবে, যা তাদের বিশ্বজুড়ে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগের সুযোগ করে দেবে। টেসলার সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হওয়ায় আমাদের হাতে শোভা পাচ্ছে স্মার্টফোন।
সূত্র: ব্রিটানিকা
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’