প্রতিপক্ষ কোচের নাক চেপে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ মরিনহো
Published: 6th, April 2025 GMT
বিতর্ক যেন সবসময়ই হোসে মরিনহোর নিত্যসঙ্গী। একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়ে বারবার শিরোনামে উঠে আসেন এই পর্তুগিজ কোচ। এবার তুর্কি কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পর প্রতিপক্ষ কোচ ওকান বুরুকের নাক চেপে ধরার ঘটনায় বড় শাস্তির মুখে পড়লেন তিনি।
তুর্কি ফুটবল ফেডারেশনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গালাতাসারাই কোচের সঙ্গে অশোভন আচরণের দায়ে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফেনারবাহচের কোচ মরিনহোকে। এই সময়ে তিনি ড্রেসিংরুম ও ডাগআউটে থাকতে পারবেন না। পাশাপাশি গুনতে হবে ২ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ তুর্কি লিরা (প্রায় ৭ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার) জরিমানা।
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার, গালাতাসারাইয়ের কাছে ২-১ গোলে হারে মরিনহোর দল ফেনারবাহচে। ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নামতে হয় পুলিশকেও। লাল কার্ড দেখতে হয় দু’দলের তিনজন ফুটবলারকে।
সবচেয়ে বড় নাটক অবশ্য ম্যাচ শেষে ঘটে। ম্যাচ অফিসিয়ালের সঙ্গে করমর্দনের সময় গালাতাসারাই কোচ বুরুকের কাছে গিয়ে আচমকাই তার নাক চেপে ধরেন মরিনহো। বুরুক সঙ্গে সঙ্গে মুখ ঢেকে মাটিতে পড়ে যান। এই ঘটনার ভিডিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ঘটনার পর গালাতাসারাই ক্লাব কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে মরিনহোর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করে। অপরদিকে ফেনারবাহচে দাবি করে, বুরুকই মরিনহোকে বারবার প্ররোচিত করছিলেন। ক্লাবের পক্ষ থেকে ব্যঙ্গ করে বলা হয়, ‘তিনি এমন অভিনয় করলেন যেন তাকে গুলি করা হয়েছে।’
তবে, সবকিছু পর্যালোচনা করে তুরস্কের প্রফেশনাল ফুটবল ডিসিপ্লিনারি বোর্ড মনে করে, বুরুকের প্ররোচনার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই শাস্তি কিছুটা কম রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত দেড় মাসে দ্বিতীয়বার নিষেধাজ্ঞায় পড়লেন মরিনহো। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে গালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচে রেফারিদের রুমে গিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানায় পড়েছিলেন তিনি। আপিলে সেই শাস্তি কমে আসে, তবে এবার আর ছাড় পেলেন না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ইরানের নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে, ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।