দুই টাকা নিয়ে তর্কাতর্কি, যাত্রীকে ছুরিকাঘাত
Published: 6th, April 2025 GMT
ঢাকা থেকে ঝিনাইগাতী আসার পথে তাকিফ পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়াকে কেন্দ্র করে বাসের সুপারভাইজারের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন সাকিল আহমেদ নামে এক যুবক। তিনি নকলা উপজেলার ডিজিটাল গণপদ্দী ইউনিয়নের বাড়ইকান্দি এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
রোববার দুপুরে শেরপুর-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের নকলা ও সদর উপজেলার মাঝামাঝি স্থানে এই ঘটনা ঘটে। আহত যুবককে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর ফুফাতো ভাই হাসানের ভাষ্য, সাকিল নকলা থেকে শেরপুরে যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। এ সময় বাসের সুপারভাইজার তাঁর কাছে ভাড়া চান। ছাত্র হিসেবে সে গাড়ির ভাড়া অর্ধেক দিতে চাইলে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৪৩ টাকা নিতে রাজি হন সুপারভাইজার। ভাঙতি টাকা না থাকায় সাকিল ৪৫ টাকা রাখতে বলেন। কিন্তু কিছুতেই দুই টাকা বেশি নিতে রাজি হননি সুপারভাইজার। এক পর্যায়ে সাকিলের সঙ্গে সুপারভাইজার, হেলপার ও চালকের তুমুল বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় চালকের সিটের সামনে থাকা একটি ছুরি নিয়ে সাকিলের পিঠে আঘাত করে সুপারভাইজার।
অবস্থা খারাপ দেখে যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে চালক গাড়ি দ্রুত চালিয়ে শেরপুর অষ্টমীতলা বাস টার্মিনালে নিয়ে যান। ইতোমধ্যে বাসের কয়েকজন যাত্রী জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ঘটনা জানালে পুলিশ গিয়ে বাসটি আটক করে। কিন্তু বাসের চালকসহ সবাই পালিয়ে যায়। পরে টার্মিনাল এলাকা থেকে চালক আলমগীরকে আটক ও বাসটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
শেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।