গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যার জবাবে রবিবার ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। গত কয়েক মাসের মধ্যে গাজা থেকে ইসরায়েলে চালানো সবচেয়ে বড় এই হামলায় ইসরায়েলে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রবিবার (৬ এপ্রিল) রাতে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস ১০টি রকেট নিক্ষেপ করেছে। ১০টি রকেটের মধ্যে পাঁচটি ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিহত করে, তবে অন্য পাঁচটির মধ্যে অন্তত একটি আশকেলনে আঘাত হানে, যার ফলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হামলার পর রাস্তায় ভাঙা গাড়ির জানালা এবং ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বলে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। হামলার ঘটনায় ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি সামান্য আহত হন এবং তাকে চিকিৎসার জন্য শহরের বারজিলাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
হামাসের মুখপাত্র আবদেল-লতিফকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
সামরিক প্রধান দেইফের নিহতের খবর স্বীকার হামাসের
ইসরায়েলি ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, আশ্রয়কেন্দ্রে দৌড়ানোর সময় আরো দু’জন আহত হয়েছেন। আক্রমণের পরে তীব্র উদ্বেগের জন্য বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রাত ৯টার কিছু পরেই গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ থেকে উপকূলীয় শহর আশকেলন এবং আশদোদের দিকে রকেট হামলা চালানো হয়। হামাস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসের এই হামলার জবাব কঠোরভাবে দিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
হামলার পর আইডিএফ-এর আরবি ভাষার মুখপাত্র কর্নেল আভিচায় আদরাই দেইর আল-বালাহ এলাকার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের তাদের এলাকা থেকে সরে যাওয়ার সতর্কতা জারি করেন। তিনি বলেন, আইডিএফ সেখানে হামলা চালানোর আগে এটিই ‘চূড়ান্ত সতর্কতা’।
এরপর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ইসরায়েলে রকেট হামলার জন্য ব্যবহৃত রকেট লঞ্চার লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে আশকেলনে হামাসের রকেট আঘাতের মুহূর্তটি দেখা গেছে। হামাসের নিক্ষেপ করা ওই রকেটটি বেশ কয়েকটি উঁচু অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের কাছে আঘাত করছে বলে মনে হচ্ছে।
আইডিএফ-এর মতে, হামাস এই হামলার সময় ১০টি রকেট নিক্ষেপ করেছে, যা গাজা থেকে বহু মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় রকেট হামলার ঘটনা।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।