নওগাঁর পোরশা উপজেলার একটি বাড়ির পৃথক কক্ষ থেকে ভাই-বোনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার মধ্যরাতে পোরশা পূর্ববাড়ি গ্রাম থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত দুজন হলেন নূর মোহাম্মদ শাহ (৫৫) ও তাঁর বোন রেজিয়া বেগম (৫৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ১৫ বছর ধরে নূর মোহাম্মদের বাড়িতে বসবাস করছিলেন বোন রেজিয়া বেগম। নূর মোহাম্মদের স্ত্রীও মারা গেছেন। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে পাশের নিয়ামতপুর উপজেলায়। বাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা গতকাল রাতে তাঁদের খুঁজতে যান। একপর্যায়ে বাড়ির পৃথক কক্ষে তাঁদের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর পাঠানো হয়।

লাশ উদ্ধারের বিষয়ে পোরশা থানার উপপরিদর্শক মাহবুব আলম জানান, অর্ধগলিত অবস্থায় লাশ দুটি পাশাপাশি ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নূর মোহাম্মাদের পেটে ধারালো চাকু কিংবা ছুরি দিয়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদিকে পাশের কক্ষ থেকে রেজিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। রেজিয়ার ঘর থেকে বেশ কিছু স্বর্ণালংকার চুরি গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চুরি কিংবা ডাকাতির কাজে বাধা দেওয়ায় তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।

লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য আজ সোমবার সকালে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এটি চুরি কিংবা ডাকাতি কারণে হত্যাকাণ্ড নাকি পরিকল্পিত, সেটির রহস্য উদ্‌ঘাটনে তদন্ত হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ