বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ। তবে আজ মঙ্গলবার এর বিস্তৃতি কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামীকালও তাপমাত্রার খুব বেশি হেরফের হবে না বলেই জানা গেছে।

এখন সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হবে কি না, তা নিশ্চিত না হলেও এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এ বৃষ্টি হতে পারে আগামী বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

চলতি এপ্রিল মাসে একাধিক লঘুচাপের কথা মাসের শুরুতেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে গতকাল সোমবারই বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়।

আজ সকালে দেওয়া আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে থাকা লঘুচাপটি একটু উত্তর–পশ্চিমে সরে এখন দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এটি আরও উত্তর–পশ্চিমের দিকে যাবে। এখন এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূল বরাবর এলাকায় অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজ সকাল প্রথম আলোকে বলেন, এই লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হবে কি না, তা এখন নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তবে লঘুচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। এ বৃষ্টি এক থেকে দুই দিন থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের প্রায় সব বিভাগের দুয়েক স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.

বজলুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হবে কি না, তা নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি। তবে বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সেই বৃষ্টি যে খুব বেশি হবে, তা বলা যাবে না।

দেশের বিভিন্ন স্থানে চলতি মাসের শুরু থেকেই চলছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। গতকাল সোমবার দেশের অন্তত আট জেলায় বয়ে যায় তাপপ্রবাহ। জেলাগুলো হলো ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও রাঙামাটি।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, আজ তাপপ্রবাহের এলাকা কমে আসতে পারে। দেশের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। এ অবস্থা থাকতে পারে কাল বুধবারও।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ