‘জোশ’, ‘আওয়ারা’, ‘শুভদৃষ্টি’, ‘দুই পৃথিবী’র মতো যেমন বাণিজ্যিক ছবি উপহার দিয়েছেন, তেমনই দর্শক তাকে দেখেছে ‘অসুর’, ‘রাবণ’, ‘মানুষ’-এর মতো ছকভাঙা চরিত্রে। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সুপারস্টার অভিনয়ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরেই প্রযোজকের ভূমিকাও সমানতালে সামাল দিচ্ছেন। দেখতে দেখতে টালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বাইশ বছর পার করেছেন নায়ক জিৎ।
এবার নীরজ পাণ্ডের ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এর সুবাদে বলিউডে অভিষেক ঘটল জিতের। এবার তিনি জানালেন, তার কাছে হিন্দির চেয়ে বাংলায় কাজ করাই নাকি বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে জিৎ বলেন, ‘এত বছর হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির কেউ আমার কথা ভাবেনি। তবে আমি বরাবরই এখানে কাজ করতে চাইতাম কারণ আমি আদতে হিন্দিভাষী। আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রিতে বাণিজ্যিক সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের ১০-১৫ বছর ধরে বিনোদিত করা অভিনেতাদের মধ্যে খুবই কমই রয়েছেন, যারা ভালো করে হিন্দি বলতে পারেন। বাংলায় কাজ করাটাই আমার জন্য আসল চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ, আমি হিন্দিতে ভাবি।’
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথমবার স্ক্রিন শেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার একে-অপরকে অনেক দিন ধরেই চিনি। ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে একসঙ্গে নিজেদের মতো করে কাজ করেছি। তাই আমাদের সমীকরণ ভীষণই ভালো। ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এর জন্য যখন একসঙ্গে কাজ করছিলাম, তখনও মনে হয়নি প্রথমবার স্ক্রিন শেয়ার করছি আমরা। সেটা আমাদের এত সহজ সুন্দর সমীকরণের জন্যই সম্ভব হয়েছে।”
হিন্দি ভাষী হলেও বাংলার দর্শকরা জিৎকে মনপ্রাণ ঢেলে আপন করে নিয়েছে। টালিউডে দু’ দশক কাটিয়ে তেইশ সালে অনুরাগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন অভিনেতা।
জিতের শুরুটা হয়েছিল ২০০২ সালের ১৪ জুন। হরনাথ চক্রবর্তীর হাত ধরে টালিউডে ‘বিজয়’ চরিত্রে আত্মপ্রকাশ। সেই ‘সাথী’ বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রির বক্স অফিসে আজও অন্যতম মাইলফলক হিসেবে রয়ে গেছে। টানা ২৫ সপ্তাহ হাউজফুল শো উপহার দিয়েছিল ‘সাথী’। ফিল্মি কেরিয়ারের গোড়াতেই সমস্ত রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিলেন জিৎ। তারপর থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘সাথী’র বিজয় থেকে টালিউডের ‘বস’ হয়ে উঠেছেন জিৎ।
গত ২ দশকে ৫৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। যার মধ্যে ২০টির বেশি ব্লকবাস্টার এবং একাধিক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর বলিউড ডেবিউ সিরিজ ‘খাকি ২’ চর্চার শিরোনামে। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত ইন ড স ট র র ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব
সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।
বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।
সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।
আরো পড়ুন:
যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ
পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার
কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।
এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।
এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।
ঢাকা/আমিনুল