গুঞ্জন ছিল সামনের গ্রীষ্মে ফ্রি এজেন্ট হয়ে যাবেন মোহাম্মদ সালাহ। মোটা বেতনে যেতে পারেন সৌদি প্রো লিগে। তবে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকালে লিভারপুল নিশ্চিত করে যে, তাদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই উইঙ্গার থেকে যাচ্ছেন মার্সিসাইডেই।

সালাহ লিভারপুলের সঙ্গে নতুন করে দুই বছরের চুক্তিতে সই করেছেন। যার মাধ্যমে মিশরীয় ফুটবলারের ক্লাব ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চলমান সব জল্পনার অবসান ঘটেছে। ৩২ বছর বয়সী এই উইঙ্গারের বর্তমান চুক্তি চলতি মৌসুমের পরই শেষ হওয়ার কথা ছিল। নতুন চুক্তির ঘোষণা আসার পর নিশ্চিত হয়েছে সালাহ অন্তত ২০২৬/২৭ মৌসুম পর্যন্ত অ্যানফিল্ডেই থাকছেন।

সালাহ লিভারপুলের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে বলেন তিনি দলকে আরও শিরোপা জিতাতে চান, অবশ্যই আমি খুবই এক্সাইটেড। আমাদের একটি দারুণ দল রয়েছে, যদিও আগেও আমাদের দল ছিল ভালো। আমি চুক্তিতে সই করেছি কারণ আমি মনে করি আমরা আরও কিছু শিরোপা জিততে পারি এবং আমার খেলাটা উপভোগ করতে পারি।”

আরো পড়ুন:

তোমার হলো শুরু, আমার হলো সারা

উড়তে থাকা বোর্নমাউথকে হারিয়েও অস্বস্তিতে লিভারপুল 

২০১৭ সালে রোমা থেকে যোগ দেওয়ার পর থেকে সালাহ লিভারপুলের জার্সিতে খেলছেন, আর এই সময়টাই তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সফল অধ্যায়। সালাহ বলেন, “আমি এখানে আট বছর খেলেছি, আশা করি এটা দশে পরিণত হবে। আমি এখানে আমার জীবন উপভোগ করছি, আমার ফুটবল উপভোগ করছি। আমার ক্যারিয়ারের সেরা সময়গুলো আমি এখানেই কাটিয়েছি।”

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে লিভারপুলের হয়ে ৩৯৩ ম্যাচে সালাহ করেছেন ২৪৩ গোল এবং ১০৯টি অ্যাসিস্ট। চলতি মৌসুমটিই তাঁর লিভারপুলের সেরা সময়, যেখানে এখন পর্যন্ত তিনি ৪৫ ম্যাচে করেছেন ৩২ গোল ও ২১ অ্যাসিস্ট। রয়েছে ২৭টি প্রিমিয়ার লিগ গোল।

লিভারপুলে সালাহ এরই মধ্যে জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ, এফএ কাপ, দুটি ইএফএল কাপ এবং ক্লাব বিশ্বকাপ। সালাহ ছাড়াও আরো দুজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের সঙ্গে চলতি মৌসুমের শেষে চুক্তি শেষ হওয়ার কথা লিভারপুলের। তারা হলেন ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড এবং অধিনায়ক ভার্জিল ভ্যান ডাইক। জোর গুণহজন আছে রিয়াল মাদ্রিদে যাবেন রাইটব্যাক আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড। অন্যদিকে ভ্যান ডাইক জানিয়েছেন তাঁর চুক্তি নিয়েও আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে ক্লাবের।

বর্তমানে লিভারপুল লিগ টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের চেয়ে ১১ পয়েন্ট এগিয়ে আছে এবং তাদের আরও ৭টি ম্যাচ বাকি আছে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ