‘উপদেষ্টাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, তাঁদের পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার খায়েশ হয়েছে’
Published: 11th, April 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান (রিপন) বলেন, ‘কিছু কিছু উপদেষ্টার বক্তব্যে শুনে মনে হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে এখন পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার একটা খায়েশ জন্ম হয়েছে। জনগণ নাকি তাঁদের পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চায়, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। সত্যিটা হলো, জনগণ একটি জবাবদিহিমূলক সরকার চায়। জনগণ ভোট দিতে চায়। জনগণ ভোটের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
আজ শুক্রবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান খানের সঞ্চালনায় ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে সমাবেশে যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাসুদ খান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মোশারফ হোসেন, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি রোকেয়া বেগম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্ট করে লেখা আছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের সরকার গঠন করবে। নির্বাচিত সদস্যদের মেজরিটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। এর বাইরে সংবিধানে অন্য কোনো কথা লেখা নেই। গত ১৫ বছর এ দেশে সেটা চলেনি, সে জন্য ২০২৪ সালের আগস্টে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। এই পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম হয়েছে। এটার জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। এটার জন্য বিপ্লব হয়েছিল। সুতরাং সেই অবস্থানের মর্মবাণী শহীদের রক্তের যে চেতনা, সেটা মনে রাখতে হবে। ধারণ করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানাই। তাঁকে আমরা সালাম জানাই। ধন্যবাদ জানাই। প্রধান উপদেষ্টা নিরলস পরিশ্রম করছেন। তাঁর গৌরবদীপ্ত নামের কারণে, বাইরের দেশের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এটা খুব ভালো কথা। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, বাংলাদেশে এমন একটি নির্বাচন উপহার দেবেন, যেটি পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সেই নির্বাচন আমরা দেশের মানুষ দেখার জন্য অপেক্ষা করছি।’
বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, আমরা সংস্কার চাই, আমরা নির্বাচন চাই। আপনাদের সরকারটি হচ্ছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আপনাদের কাজ বিমানবন্দর বানানো নয়, আপনাদের কাজ দেশকে সিঙ্গাপুর বানানো না। আপনাদের কাজ মেডিকেল কলেজ বানানো না, আপনাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ যাতে ভবিষ্যতে সিঙ্গাপুর থেকে বড় দেশ হতে পারে, আমাদের কাজ হচ্ছে এখানে যেন আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হতে পারে, মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে, বাংলাদেশের বিনিয়োগ বাড়তে পারে, এ দেশের ছেলেমেয়েরা ভালো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে জন্য ভালো বিশ্ববিদ্যালয় হয়, ভালো কলেজ হয়, আইনশৃঙ্খলা ঠিক থাকে, যেখানে মাদকের বাড়াবাড়ি থাকবে না, এমন একটি ব্যবস্থার সূচনা করা। সেই পথটা তৈরি করে দিয়ে যাওয়া।’
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কাউকে কাউকে দেখছি, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের নিয়ে দল ভারী করার চেষ্টা করছেন। কেন এমনটা করছেন? বিএনপিতে কি লোকের অভাব? কোটি কোটি মানুষ বিএনপিকে সাপোর্ট করে। ওই পতিত সরকারের লোকদের তাহলে কেন পুনর্বাসন করা হচ্ছে? যাঁরা আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রশ্রয় দেবেন, দলে ভেড়াবেন, সে যত বড়ই নেতা হোন না কেন, তাঁকে বয়কট করবেন। যে বা যাঁরা অন্যায় করছেন, গণশত্রুতে পরিণত হচ্ছেন। তাঁদের দায়ভার কোনোভাবেই দল নেবে না। এটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশনা। তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে এবং বহিষ্কার করে দেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপন দ র ক জ ব এনপ র উপদ ষ ট র জন য করছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ নানান অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দিচ্ছে কি না তা নিয়েও বড় প্রশ্ন রয়েছে।”
বুধবার (৩০ জুলাই) সাভারের আশুলিয়ার দারুল ইহসান মাদরাসা মাঠে ‘নারকীয় আশুলিয়া’ শীর্ষক এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “ফ্যাসিবাদী অপশক্তি রাষ্ট্র-রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার জন্য ওৎ পেতে রয়েছে। সরকারের যেকোনো ভুল সিদ্ধান্তে গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রাপথ সংকটে পড়তে পারে। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ এবং উগ্রবাদও মাথাচাড়া দিতে পেরে।”
আরো পড়ুন:
ঠাকুরগাঁওয়ে ২ বিএনপি নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
তিনি বলেন, “দেশের জনগণ কয়েকজন মানুষের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য গত দেড় দশক ধরে আন্দোলন অব্যাহত রাখেনি। কিংবা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়নি। জনগণ রাষ্ট্র এবং সরকারে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্যই স্বৈরাচারকে হটিয়েছে, জীবন উৎসর্গ করেছে। সুতরাং সরকারে যখন যারাই থাকুক, সরকার পরিচালনা করতে চাইলে অবশ্যই নাগরিকদের কথা শুনতে হবে।”
বিএনপি নেতা বলেন, “জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের রাজনীতি করতে চায় বিএনপি। নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগের অন্যতম প্রধান উপায় হলো নির্বাচন। দেশের দায়িত্বশীল দল হিসেবে বিএনপি বারবার সুষ্ঠু ভোটের দাবিকে অগ্রাধিকার দেয়।”
ঢাকা/রায়হান/সাইফ