হাঁটা শরীরের জন্য উপকারী। নিয়মিত হাঁটলে মানসিক চাপ কমে। ওজনও কমে। অনেকেই আছেন ঘাম হওয়ার কারণে গরমকালে হাঁটতে পছন্দ করেন না। কিন্তু শরীর সুস্থ রাখতে গরমের দিনেও নিয়মিত হাঁটা দরকার।

গরমকালে যেহেতু তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এ কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খেলে শরীরে পানির পরিমাণ কমতে থাকে। আবার বেশি রোদে হাঁটলে শরীর ক্লান্ত লাগে। বিশেষজ্ঞদের মতে,গরমকালে ভোরবেলা অর্থাৎ যখন পরিবেশ ঠান্ডা ও শীতল থাকে তখন হাঁটতে যেতে পারেন। ভোর পাঁচটা থেকে সাতটার মধ্যে হলে ভালো। এসময় সূর্যের আলো উঠলেও খুব বেশি গরম লাগবে না । শরীরে ভিটামিন ডিয়ের ঘাটতিও পূরণ হবে। 

গরমের দিন ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। নিয়মিত হাঁটতে হাঁটতে হাঁটার সময় বাড়াতে পারেন। তারপর ধীরে ধীরে আধঘন্টা থেকে এক ঘন্টা হাঁটতে পারেন। তবে বেশি ক্লান্ত লাগলে আর হাঁটবেন না। তবে ক্লান্তভাব কমাতে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস রাখতে হবে। 

নিয়মিত হাঁটলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়-

মানসিক চাপ কমে : সকালে হাঁটার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এতে শরীর সুস্থ থাকে। মনে রাখবেন, প্রতিদিন সকালে ঠান্ডা পরিবেশে হাঁটলে শরীর সতেজ থাকবে। মানসিক চাপ কমবে। সারাদিন কাজের জন্য অনেক এনার্জি পাবেন।

শ্বাস প্রশ্বাস ভালোভাবে নিতে পারবেন: সকালে নিয়মিত হাঁটলে শরীর সুস্থ থাকবে, বড় বড় রোগের ঝুঁকি কমবে। শ্বাস প্রশ্বাস ভালোভাবে নিতে পারবেন। 

ওজন কমবে: নিয়মিত হাঁটলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মনে রাখবেন, খুব জোরে হাঁটলে শরীর থেকে ক্যালোরি কমতে থাকবে। এতে ওজনও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। 

হৃদরোগের ঝুঁকি কমে: সকালবেলা নিয়মিত হাঁটলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়বে: প্রতিদিন সকালবেলা হাঁটলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বাড়বে। কোনও রকম ফ্লু সহজে আক্রান্ত করতে পারবে না। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপক র

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ