সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ও আবেদপুত্র সোহানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ
Published: 13th, April 2025 GMT
সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ রোববার এ আদেশ দেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লায় তাজুল ইসলামের ৬২টি দলিলের মাধ্যমে কেনা সম্পদ ও তিনটি গাড়ি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আদালত তাঁর ৩৪টি ব্যাংক হিসাব ও ১৮টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, তাজুল ইসলাম পাবলিক সার্ভেন্ট হয়ে অপরাধমূলক আচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি ৭ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর ৩৫টি ব্যাংক হিসাবে ৭৩ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকা জমা হয়। তোলা হয়েছে ৬৬ কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
আবেদ আলীর ছেলে সোহানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ
প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদক জানিয়েছে, মাদারীপুরে সোহানুর রহমানের জমি ও একটি গাড়ি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাঁর দুটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
৭ এপ্রিল সৈয়দ আবেদ আলীর মাদারীপুরের জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। তাঁর ১৪টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বিমল কৃষ্ণের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩২ কোটি টাকা জমা হওয়ার তথ্য পেয়েছে দুদক। তোলা হয় ৩১ কোটি টাকা। এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আবার রন হক ও রিক হকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
শিল্পগোষ্ঠী সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার, তাঁর ভাই রিক হক সিকদারসহ ১৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অপর ১১ জন হলেন সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আলম আহাম্মেদ, হরিদাস বর্মন, আরিফ মো. শহিদুল হক, এস এম বুলবুল, এম এ ওয়াদুদ, চৌধুরী মুশতাক আহমেদ, মোয়াজ্জেম হোসেন, খলিলুর রহমান, জাকারিয়া তাহের ও মাররুর হোসেন।
এর আগে গত ১১ মার্চ রন হক সিকদার, তাঁর ভাই রিক হকসহ ১৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।