আজ সোমবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে সূচকের উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারের ফিউচার্সও ঊর্ধ্বমুখী। মূলত কম্পিউটারসহ ইলেকট্রনিকসামগ্রীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক অব্যাহতি দেওয়ায় আজ এই শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। যদিও সূচক তেমন একটা বাড়েনি। ট্রাম্প বলেছেন, ইলেকট্রনিকসামগ্রীতে শুল্কছাড়ের এই ঘোষণা সাময়িক।

গতকাল রোববার ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আগামী সপ্তাহেই সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে। সেই সঙ্গে স্মার্টফোনের বিষয়েও শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এমএসসিআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, যদিও গত সপ্তাহে এই সূচকের পতন হয়েছিল ৪ শতাংশ। চীনের ব্লু চিপসের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। জাপানের নিক্কেই এশিয়া সূচকের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সূচকটিই গত সপ্তাহে অনেকটা ওঠানামা করেছে। রীতিমতো খ্যাপাটে আচরণ করেছে।

এ ছাড়া এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্স সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ; নাসডাক ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। গত সপ্তাহে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তারপরও ২ এপ্রিল ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের আগে এই সূচক যে অবস্থায় ছিল, সেই জায়গা থেকে এখনো ৫ শতাংশ নিচে।

ওদিকে ইউরোস্টক্স ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। এফটিএসই ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ আর ডিএএক্স ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ।

এদিকে আজও বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রার বিপরীতে ডলারের পতন অব্যাহত আছে। এর আগে গত সপ্তাহেও ডলারের পতন হয়েছে ৫ শতাংশ। আজ ইউরো, ইয়েন ও সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ডলারের দরপতন হয়েছে। তবে এই অনিশ্চয়তার সময় বিনিয়োগের আরেক নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে খ্যাত সোনার দাম বাড়ছে। আজ সোমবার সকালে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আবারও রেকর্ড গড়েছে। হলুদ এই ধাতুর দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ২৪৫ ডলারে উঠে গেছে।

এদিকে তেলের অবস্থা ভালো নয়। একদিকে আছে মন্দার শঙ্কা, আরেক দিকে ওপেকের তেল সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা; এই দুয়ে মিলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আজও কমেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৭ সেন্ট কমে ৬৪ দশমিক ৫৯ ডলারে নেমে এসেছে। ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১৫ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি ৬১ দশমিক ৩৫ ডলারে নেমে এসেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ