‘পান্তাভাতের জল, তিন পুরুষের বল’—পান্তার গুণ নিয়ে প্রচলিত ছড়ার এটি একটি। বাংলাদেশের প্রাচীন কৃষি সভ্যতা, মানুষের অর্থনৈতিক প্রজ্ঞা ও সামাজিক প্রথা জড়িত পান্তার সঙ্গে।

শহুরে মধ্যবিত্তের সংস্কৃতিতে পান্তা নতুন করে জায়গা পেয়েছে বাংলা নববর্ষ বৈশাখ উদ্‌যাপনকে ঘিরে। এবারও পয়লা বৈশাখে অনেক অনুষ্ঠানে ‘পান্তা খাওয়ার’ কর্মসূচি থাকছে, যা অনেকের কাছে একটি দিনের আনন্দ উদ্‌যাপনের অনুষঙ্গ মাত্র; যদিও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের বড় অংশের প্রাত্যহিক খাবার পান্তা। গরিবের এ খাবারের নতুন গুণের সন্ধান পাওয়া গেছে। আর তা খুঁজে পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক।

শরীরের জন্য উপকারী নানা উপাদান খুঁজে পাওয়া গেছে পান্তা নিয়ে নতুন এ গবেষণায়। দেখা গেছে, পান্তাভাতে অনেক উপকারী অণুজীব আছে। আবার এখানে নতুন কিছু অণুপুষ্টি উপাদানও পাওয়া গেছে। গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পান্তা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হারে বাড়ে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী ফুড অ্যান্ড হিউম্যানিটি–তে পান্তাভাত নিয়ে নতুন এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাজ্যের লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ফার্মাসি অ্যান্ড বায়োমলিকুলার সায়েন্সেসের অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন সরকার। গবেষণায় যুক্ত ছিলেন যুক্তরাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।

অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এবারের গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল অপুষ্টির সঙ্গে লড়াইয়ে আসলে এ খাবার কতটুকু উপযোগী, তা খুঁজে দেখা। গবেষণায় পান্তার অণুজৈবিক উপাদান, পুষ্টির উপাদান এবং কম শর্করার খাদ্য হিসেবে এর উপযোগিতা যাচাই করা হয়েছে। এসব একাধিক পুষ্টি উপাদান খুঁজতে পান্তাভাতে থাকা অণুজীবের জিনগত রহস্য উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্সিং) করা হয়েছে।

সহজেই তৈরি করা যায় পান্তাভাত। কম খরচের এ খাবারের পুষ্টির মান নিয়ে আগেও একাধিক গবেষণা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক খালেদা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ গবেষণায় অভিনবত্ব আছে। আরও বিস্তৃত পরিসরে এটি করা হলে বাঙালির পান্তার গুণাগুণ নিয়ে বিশ্ববাসী জানতে পারবে। সে ক্ষেত্রে শুধু বাঙালি নয়, অন্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষকেও গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

অণুজীব ও অণুপুষ্টির সমাহার পান্তায়

যুক্তরাজ্যের মিডলসব্রো শহরে থাকা বাঙালি পরিবারে ১৩ সদস্যকে নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ব্যবহৃত হয়েছে সাদা বাসমতী চাল। রাতে এ চালের ভাতে পানি দিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টার জন্য রেখে দেওয়া হতো দুটি ভিন্ন তাপমাত্রায়-২০ ও ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ দুই ধরনের ভাতে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ ও অণুপুষ্টির উপাদানের মাত্রা দেখা হয়। খেতে দেওয়া হয় গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের এবং খাওয়ার পর তাঁদের রক্তে শর্করা বৃদ্ধির মাত্রা দেখা হয়।

পান্তা যেভাবে তৈরি হয়, তাকে গাজন বা ফারমেন্টেশন বলা হয়। সাধারণত গাজনপ্রক্রিয়ায় খাবারে অণুজীবের জন্ম হয়। নতুন এ গবেষণায় পান্তায় প্রোবায়োটিক-সমৃদ্ধ ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পারে।

অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন সরকার বলেন, ‘আমরা সাধারণ ভাত এবং পান্তাভাতের তুলনামূলক পরীক্ষা করে দেখেছি, পান্তায় নানা ধরনের বিপুল সংখ্যায় উপকারী অণুজীবের সন্ধান পেতে থাকি। সাধারণ ভাতের চেয়ে পান্তায় ১০ গুণ বা তারও বেশি উপকারী অণুজীব তৈরি হতে দেখি।’

এ গবেষণার দ্বিতীয় বড় দিক হলো পান্তায় একাধিক অণুপুষ্টির সন্ধান। এর মধ্যে আছে লৌহ, জিংক, কপার, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম, বোরন ও পটাশিয়াম, যা সাধারণ ভাতের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।

যেখানে প্রতি আড়াই গ্রাম সাধারণ ভাতে শূন্য দশমিক ৫ মাইক্রোগ্রাম লৌহ থাকে, সেখানে একই পরিমাণ পান্তায় পাওয়া যায় প্রায় ১ মাইক্রোগ্রাম। ক্যালসিয়ামের মাত্রা সাধারণ ভাতে শূন্য দশমিক ১০ মাইক্রোগ্রাম পাওয়া গেলেও পান্তায় তা শূন্য দশমিক ৪০ মাইক্রোগ্রামের বেশি পাওয়া গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, ‘ভাতে যে আঁশ থাকে, সেটা সাধারণ রান্না করা ভাতে অবমুক্ত হয় না। কিন্তু পানি দিয়ে রাখার ফলে যখন গাজনপ্রক্রিয়া সংঘটিত হয়, তখন অণুজীবের মাধ্যমে এসব আঁশ দ্রুত অবমুক্ত হয় এবং যার ফলে অণুপুষ্টির কণার বিপুল সমাহার হতে পারে। নতুন গবেষণা আমাদের এমন নতুন তথ্যের সন্ধান দিল। এটি খুব তাৎপর্যপূর্ণ।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ধ ক উপ দ ন উপক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভিসা ও প্রযুক্তি দিয়ে আসিয়ানে সংযোগ বাড়াচ্ছে চীন

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সদস্যরা এখনও মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকা। এসব দেশে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ কম থাকায় গবেষণা ও উন্নয়নে তেমন অগ্রগতি নেই। প্রযুক্তির সীমিত বিস্তারের কারণে আজও এই অঞ্চলটি পেছনে পড়ে আছে। শিল্প খাতে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ ও নিম্নমানের শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নেও অঞ্চলটি পিছিয়ে। 

প্রতিরক্ষা খাত দুর্বল হওয়ায় পরিবর্তিত ঝুঁকি ও হুমকির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সাহস নেই দেশগুলোর। এ কারণে মিয়ানমার সংকটে শক্তিশালী কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না জোটটি। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বহিরাগত শক্তি এই অঞ্চলে ক্রমশ জেঁকে বসছে। বিশেষ করে চীন বিনিয়োগের পাশাপাশি ভিসা ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে আসিয়ানে সংযোগ বাড়াচ্ছে।     

বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমার সংকট নিয়ে আসিয়ান এখনও বিভক্ত। একদিকে চীনের প্রভাব আসিয়ানকে মিয়ানমারে পদক্ষেপ নিতে বাধা দিচ্ছে, অন্যদিকে বহিরাগত শক্তির ওপর নির্ভরতা নিজেদের সক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। আঞ্চলিক নেতৃত্ব এবং ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক দৃশ্যপটে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা না রাখায় মিয়ানমার সংকট গভীর হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।  এই অঞ্চল ঘিরে চীন প্রতিরক্ষাসহ নানা খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। থেমে নেই যুক্তরাষ্ট্রও। উৎপাদন ও প্রযুক্তি খাতে যথেষ্ট উন্নতি না করতে পারায় দেশগুলো সামনের দিকে অগ্রসর হতে বাধা পাচ্ছে। 

শক্তিশালী শাসনব্যবস্থার অভাবে তারা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। এই অবস্থায় এই অঞ্চলে অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। 

আসিয়ানের সদস্য দেশগুলো হলো- ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। 

১০ দেশের এই জোটটির লক্ষ্য দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। আসিয়ানে গড় মাথাপিছু আয় প্রায় ৫ হাজার ৩০০ ডলার এবং দেশগুলোর সম্মিলিত জিডিপি প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার।   

আসিয়ান কোন দিকে ঝুঁকছে, যুক্তরাষ্ট্র না চীন- এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ নিক্কেই এশিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দেশগুলোর উচিত বেইজিংয়ের প্রবৃদ্ধি থেকে লাভবান হওয়া। তিনি ভারতের সঙ্গেও বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

অন্যদিকে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কলিন্স চং ইউ কিট মনে করেন, আত্মরক্ষার নিজস্ব শক্তি ও ক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত আসিয়ান দেশগুলোকে মার্কিন নিরাপত্তার ছাতার তলেই থাকতে হবে।  

অধ্যাপক কলিন্স ইউরেশিয়া রিভিউকে বলেন, গত কয়েক দশক ধরে আসিয়ান দেশগুলো নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের ওপর নির্ভর করেছে। হঠাৎ করে চীন এই অবস্থানে যেতে পারবে না। আসিয়ান দেশগুলো এটা ভালো করেই জানে। যদিও বেইজিংকে এই অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক বিকল্প ও সম্পদের প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে দেখা হয়। 

গালফ নিউজের সিনিয়র বিশ্লেষক বলরাম মেনন মনে করেন, অনেক বছর ধরে আসিয়ানসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে আসছে। অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্র ভোক্তা বাজার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিনিয়োগও বাড়াতে চায় ওয়াশিংটন। 

থাইল্যান্ডের মাহিদোল ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উইলিয়াম জে জোন্স মনে করেন, আসিয়ান রাষ্ট্রগুলোকে বহিরাগত শক্তির কাছে ঐক্যবদ্ধ বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদর্শন করতে ইচ্ছুক হতে হবে। ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতির পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে পূর্ব এশিয়াও। এজন্য আসিয়ানকে বাস্তবসম্মতভাবে একটি ঐক্যফ্রন্ট উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।  

আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করছে চীন 

ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা ও ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যে আসিয়ান ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার গভীরতা আগের চেয়ে বেড়েছে। চীন দেশগুলোর সঙ্গে সখ্য গড়তে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহারকে গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা চীনকে এআই প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পরামর্শ দিয়েছেন। 

এছাড়া চীন আঞ্চলিক সংযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য চালু করেছে ‘আসিয়ান ভিসা’। আন্তঃসীমান্ত ভ্রমণ এবং আঞ্চলিক একীকরণে এটি চীনের বড় পদক্ষেপ। 

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান মনে করেন, নতুন ভিসা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান পারস্পরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে।   

গত ২৭ মে কুয়ালালামপুরে হয়ে গেল আসিয়ান-চীন-জিসিসি (উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ) শীর্ষ সম্মেলন। তিনটি পক্ষ তাদের নিজ বাজারকে  সংযুক্ত করার মাধ্যমে বিশাল অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ উন্মোচন করতে পারে। তিন পক্ষের সম্মিলিত শক্তি বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃশ্যপটকে নতুন রূপ দিতে পারে।

ক্ষমতার আধিপত্য বজায় রেখেছে ওয়াশিংটন

অধ্যাপক কলিন্স চং ইউ কিট মনে করেন, আসিয়ানে প্রযুক্তিগত আধিপত্যসহ অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে আগামী ৫০ বছর ওয়াশিংটন প্রধান ভূমিকায় থাকবে। এই সময়ের মধ্যে দেশগুলোতে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক বিভাজন ঘটতে পারে। ফলে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তার জন্য তারা বিদেশি শক্তির ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই সুবিধা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।  

কঠোর নিরপেক্ষতা থাকা সত্ত্বেও আসিয়ান দেশগুলো প্রায় নিশ্চিতভাবেই নতুন সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও মনে করেন কলিন্স চং। তিনি বলেন, দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান কেন্ত্রিক এই সংঘাত শুরু হতে পারে। এই সংঘাতে ওয়াশিংটন যুক্ত হয়ে পড়লে দক্ষিণ চীন সাগরে চীন বেকায়দায় পড়বে। ফলে আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে আরও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা থাকবে।    

সূত্র: গালফ নিউজ, ইউরেশিয়া রিভিউ, ইস্ট এশিয়া ফোরাম 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ