ডাক্তারকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে এনে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেলের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ও আইসিইউ এর প্রধান ডা. মো. মোশাররফ হোসেন।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিডফোর্ডে মেডিলাইফ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে ঘটনাটি ঘটে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী ডা.

মো. মোশাররফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক, মোজাম্মেল মামুন ডেনি, সদস্য মাইদ, সাদমান সাম্যসহ ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী মেডিলাইফ হাসপাতালে প্রবেশ করেন এবং তারপর অপারেশন থিয়েটারে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হিমেলসহ তার নেতাকর্মীরা অপারেশন থিয়েটার রুমে অপারেশন চলাকালে প্রবেশ করে ড. মোশাররফের কলার ধরে টানাটানি শুরু করেন। পরে হুমকি-ধামকি দেওয়ার একপর্যায়ে মারধর শুরু করেন।

ভুক্তভোগী ডা. মো. মোশাররফ বলেন, “মিডফোর্ডে আমার মেডিলাইফ হাসপাতালে আমি অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম। তখন অপারেশন চলছিল। আসরের আজান হলে আমি নামাজ পড়ছিলাম। সালাম ফিরিয়ে দেখি হিমেলসহ ১০-১৫ জন আমার পেছনে দাঁড়ানো। আমাকে হিমেল জিজ্ঞেস করলো, ‘এই তোর নাম কি ডাক্তার মোশাররফ?’ পরিচয় তাদের বললাম, আমি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলের অধ্যাপক এবং সেখানকার আইসিইউ এর প্রধান।”

তিনি বলেন, “আমি তাদের সুন্দর করে কথা বলতে বললাম। আমি তাকে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে সে বলল, সে জগন্নাথের ভিপি, তার নাম হিমেল। সে আমার ফোন চাইল এবং এক পর্যায়ে হিমেল আমার ফোন কেড়ে নেয়। একপর্যায়ে বলে, এখানে ব্যবসা করতে হলে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “বিল্ডিংয়ের তিন তলায় আমার একটা আইসিইউ ছিল। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলে আমার সেই আইসিইউ দখল করে রেখেছিল। ৫ আগস্টের পর তারা পালিয়ে যায়। কমিশনার কাজী আবুল বাশারসহ আমরা একটা মিটিং করি। সেখানে ওসি ছিল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক সফু ভাই ছিল। আমরা বিচারে বসেছিলাম সমস্যা সমাধানের জন্য। সবার সাথে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ঝামেলা না করে তিন তলায় তালা মারা থাকুক। বিচার করে, ফাইনাল করে আমরা তালা খুলে দেব।”

ভুক্তভোগী বলেন, “আমি যখন হিমেলকে বললাম, আমি এ বিষয়টি সফু ভাইকে জানিয়েছি। সফু ভাই বিচার করে একটা ব্যবস্থা নেবেন। তখন হিমেল বলে, ‘ওই সফু কে, সফু কে? আমি হিমেল, জবির ভিপি।’ আমি তখন তাকে সফু ভাই ও ডিসির সঙ্গে কথা বলতে বলি। কিন্তু তারা আমার ফোনটা আমাকে দেয়নি। এক পর্যায়ে তারা রুম আটকিয়ে আমাকে মারধর শুরু করে। হিমেল আমাকে হুমকি দেয়, আমি আমার ওয়ারীর যে বাসায় থাকি, সেখান থেকে তুলে নিয়ে আসবে। আমার হাসপাতালে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিল। তারা সবাই দেখেছে।”

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমি সেখানে গিয়েছিলাম, আমার মামার বিল্ডিং ডাক্তার হারিস তালা দিয়ে রাখছে। আমি তাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করেছি। সে যে মারধরের কথা বলছে, সেটা মিথ্যা। আমি কেন মারব?”

তিনি বলেন, “বিল্ডিংটি যার, সে আমার মামা। পারিবারিক সম্পর্কের কারণে আমি বলতে গিয়েছি। তারা চারজন পার্টনারে হাসপাতাল দিয়েছিল। সেখানের কিছু জিনিস ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা। সেটা আমি সমাধান করতে গিয়েছি। চাঁদা যাওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা ও বানোয়াট।”

তিনি আরো বলেন, “আমি বলে আসছি তারা বুধবার বসবে, তারপর একটা সমাধান করবে। এখানে আমার আত্মীয় বা রক্তের না হলে যেতাম না। রুমে যে তালা ঝুলিয়ে রাখছে ডাক্তার হারিজ, আমি রুমের তালাও খুলিনি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জগন ন থ ম শ ররফ ছ ত রদল পর য য় ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ