জুলাই আন্দোলনে গুলির নির্দেশ: সহকারী কমিশনার ও অতিরিক্ত এসপি গ্রেপ্তার
Published: 14th, April 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে নরসিংদীতে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ায় সহকারী কমিশনার সাইফুল ইসলাম ও রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বাণ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার নরসিংদীর গণহত্যার মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সাইফুলসহ একই অভিযোগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বাণ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, পুলিশকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গুলির নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নরসিংদীতে নিহত হন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহমিদ ভুঁইয়া।
পুলিশের গুলিতে তাহমিদ নিহত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ। পরে লাশ নিয়ে মিছিল করতে গেলে আবারও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে আরও একজন নিহত হন। জুলাই আন্দোলনে শুধু নরসিংদী জেলাতেই নিহত হয়েছেন প্রায় ২০ জন। পাশাপাশি হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়।
জুলাই গণহত্যায় এখন পর্যন্ত ২২ মামলায় ১৪১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র ৫৪ জন। যাদের অধিকাংশই পুলিশ সদস্য।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, তদন্ত রিপোর্টে বিভিন্ন পেশার আসামিদের চিত্র ওঠে আসবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ