মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত করেরহাট ইউনিয়নের ভালুকিয়া গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামরুল হোসেন ও পশ্চিম জোয়ার গ্রামের বাসিন্দা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন, করেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান গিয়াস উদ্দিন জসীমের বসতঘর ভাঙচুর করা হয়। হামলা ও ভাঙচুরের সময় দুর্বৃত্তদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করায় কামরুলের মা রাশেদা আক্তার (৬০) ও তার মামা আইনুল কবিরকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হোসেনের এক চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী জানান, সোমবার দেড়টার দিকে প্রথমে চারটি মোটরসাইকেল ও দুইটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ১৮-২০ জনের দুর্বৃত্তের দল বাড়ির প্রধান ফকট টপকে বাড়িতে প্রবেশ করে। এদের সবার মাথায় হেলমেট মুখে মাস্ক পড়া ছিল। এসময় কামরুলের মা রাশেদা আক্তারকে তিনি ও কামরুলের মেঝ ভাইয়ের স্ত্রী রান্নার কাজে সহযোগীতা করছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। ঘরের সব ধরণের আসবাবাপত্র ভাঙচুর ও আলমারি ভাঙচুর করে স্বর্ণালংকার, মোবাইলফোন ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। 

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে কামরুল বাড়িতে থাকেন না। 

পশ্চিম জোয়ার গ্রামের এক বাসিন্দা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, জুলাই আন্দোলনে সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে সাঊেশ উপজেলা চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন ও করেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সুলতান গিয়াস উদ্দিন জসীম বাড়িতে থাকেন না। সোমবার দুপুরে ১৮-২০ জনের একটি দল বাড়িতে এসে তাদের ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে সব কিছু তছনছ করে দেয়।

সরেজমিনে ভালুকিয়া ও পশ্চিম জোয়ার গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কামরুল হোসেনের ঘরের সাতটি কক্ষ, রান্না ঘর ও তিনটি বাথরুমে থাকা সব ধরণের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে তছনছ করে দিয়েছে। ঘরের আলমারির দরজা ভেঙ্গে কাপড় চোপড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে। এসময় তারা এক জোড়া স্বণের ছুড়ি, দুইটি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে জানান কামরুলের চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী। 

ঘটনার পর কামরুলের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ভয়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে চলে গেছে। এনায়েত হোসেন ও জসীমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নয়নের ঘরের একটি কক্ষ ও জসীমের ঘরের তিনটি কক্ষে হামলা চালিয়ে সব আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। তাদের ঘরে গিয়ে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।

ভালুকিয়া গ্রামের রুহুল আমিন নামে এক বৃদ্ধ জানান, তারা গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন। এসময় কামরুল হোসেনের বাড়িতে শোর চিৎকার শুনে মসজিদ থেকে তারা গ্রামের লোকজন সেখানে গিয়ে দেখেন ঘরের সব ভাঙচুর করা হচ্ছে। তবে কারা ভাঙচুর করেছে সেটা জানেন না।
 
জোরারগজ্ঞ থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বির আহম্মদ সেলিম জানান, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা তিনি জেনেছেন। কিন্তু লুটপাটের বিষয়টি ঠিক নয়। তবে হামলার ঘটনা নিয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত

যশোরের চৌগাছায় ধর্ষণের শিকার ৭ বছরের সেই শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। একই সঙ্গে শিশুটির আইনি সুবিচার পেতে জেলার জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিশুটির চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি কথা বলেন।

বুধবার যশোরের চৌগাছায় বাড়ির পাশে শিশুটিকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী দাদা। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির মা থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে (৫৫) আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শিশুটির মা হাসপাতালে জানান, তার মেয়েটি বুধবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এসময় শিশুটিকে একা পেয়ে মিজানুর জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে কান্না করছিল। তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। তার চিকিৎসা চলছে। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত বলেন, শিশুটিকে আশাঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরের ক্ষত স্থানে অপারেশন করা হয়েছে। এখন শিশুটিকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। এখন শঙ্কামুক্ত। 

চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শিশুটির শরীরে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, রিপোর্ট পাওয়ার পর আসল ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার পরেই অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিকে বিচারক কারাগারে প্রেরণ করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে যান বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ সময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) যশোরের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিএনপি নেতা অমিত শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং শিশুটির পরিবার আইনি বিচার পেতে  জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা দেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শিশুটির সঙ্গে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শিশুটির বাবা বিদেশ থাকে। এই পরিবারে কোন পুরুষ সদস্য নেই। তাছাড়া তারা গরীব। ঘটনাটি জানার পর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে আমরা শিশুটিকে দেখতে যাই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রেকর্ড তছনছ করে ২ হাজার কোটি টাকায় জার্মান মিডফিল্ডারকে কিনছে লিভারপুল
  • সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা
  • ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত