পয়লা বৈশাখে নতুন বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) দেখা গেল এক ব্যতিক্রমী আয়োজন। বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিচালিত সংগঠন সেন্টার ফর বেঙ্গল স্টাডিজ ‘বর্ষবরণ শামিয়ানা ১৪৩২’ উপলক্ষে আয়োজন করে ‘ভালো কাজের হালখাতা’ অনুষ্ঠান। আয়োজনজুড়ে ছিল বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যনির্ভর নানা তথ্য।

‘ভালো কাজের হালখাতা’র বোর্ডের দুই পাশে দুটি খালি জায়গা রাখা ছিল। খালি জায়গার বাঁ পাশে লেখা ছিল ‘যাহা পাইতে চাই’ আর ডান পাশে লেখা ছিল ‘যাহা হারাতে চাই’, যেখানে দর্শনার্থীরা নিজেদের মতো করে নতুন বছরে পেতে চাওয়া এবং হারাতে চাওয়ার কথা লিখেছেন। হরেক রকম চাওয়া-পাওয়ার লেখা নানা ধরনের রঙের কালিতে ভিন্ন মাত্রা দেয় ‘ভালো কাজের হালখাতা’র বোর্ডটিকে।

‘যাহা পাইতে চাই’ স্থানে অনেকে লিখেছেন নিজেদের মনের কথা। কেউ লিখেছেন ‘নতুন বছরে বউ চাই, মিষ্টি একটা বউ চাই’, আবার কেউ লিখেছেন, ‘বউ হতে চাই’। সবার চাওয়া শুধু বউ চাওয়া আর বউ হতে চাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। অনেকে চেয়েছেন ‘বিবাহ ভাতা’। আবার অনেকে লিখেছেন ‘আমার প্রিয়তমাকে চাই’, ‘বউয়ের ফ্যাসিবাদ মুক্ত যাক’, ‘পুরুষের অধিকার সুনিশ্চিত চাই’।

নতুন বছরে চাওয়া গড়িয়েছে রাজনৈতিক বিষয়েও। একজন লিখেছেন, ‘নির্বাচন চাই’, আরেকজন লিখেছেন, ‘ড.

মুহাম্মদ ইউনূসকে ৫ বছর ক্ষমতায় চাই’। আরেকজন রহস্য করে লিখেছেন, ‘ঈদের পরে আন্দোলন’, আবার ‘আপার (হাসিনার) ফাঁসি চাই’ লিখছেন কেউ কেউ।

আবার কেউ কেউ লিখেছেন, ‘দেশে শান্তি চাই’, ‘গরিবের পেটে ভাত আর মাথায় একটা ছাদ চাই’, ‘দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই’, ‘নিরাপদ সড়ক চাই, পরিবেশদূষণ বন্ধ চাই’, ‘নদীদূষণ বন্ধ চাই’, ‘সৎ লোকের শাসনব্যবস্থা চাই’, ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন চাই’।

‘যা হারাতে চাই’-এর জায়গায় চোখ বুলালে ব্যতিক্রম অনেক কিছু দেখা যায়। কেউ লিখেছেন ‘বেকারত্ব হারাতে চাই’, আবার কেউ লিখেছেন, ‘বর্তমানকে হারাতে চাই’। কেউ একজন লিখেছেন, ‘সকল রাগ ও দুঃখ এবং ভাব দেখানো মানুষদের হারাতে চাই’।

এখানেও রাজনীতির কথা উঠে এসেছে। কেউ লিখেছেন, ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি হারাতে চাই’, আবার কেউ লিখেছেন, ‘ভারতের আধিপত্যমুক্ত বাংলাদেশ চাই’। আবার কেউ কেউ লিখেছেন, ‘চাঁদাবাজি, টেম্পোস্ট্যান্ড বন্ধ চাই’, ‘বালি আর মাটিখোরদের হারাতে চাই’।

কেন এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন ছিল, তা নিয়ে সেন্টার ফর বেঙ্গল স্টাডিজের মুখপাত্র আশিক খানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘হালখাতা আমাদের গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্য। ক্যাম্পাসে তো আমরা হালখাতা করতে পারব না, সে জন্য আমাদের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন “ভালো কাজের হালখাতা” রেখেছি।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে

ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
 
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  

ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।

সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
 
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’ 

আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’ 

সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২’
  • রমনা বটমূলে বোমা হামলা: হাইকোর্টের রায় ৮ মে
  • রমনা বটমূলে বোমা হামলা: হাইকোর্টের রায়  ৮ মে
  • সিডনিতে প্রতীতির বর্ষবরণে বাঙালিয়ানার জয়গান
  • দৃশ্যপটে ‘আনন্দ’, মঙ্গল কোথায়