নোয়াখালী কলেজের শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত পোশাক নিয়ে সমালোচনার ঝড়
Published: 14th, April 2025 GMT
বাঙালিদের জাতিগত প্রধান উৎসব বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দেশের শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে নানা উৎসব আয়োজন। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নোয়াখালী জেলা, উপজেলা প্রশাসন এবং জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন করায়।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) এ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিজয় মেলা, দেশীয় খাবার পরিবেশন সহ বাঙালি সংস্কৃতির নানা আয়োজন।
তবে বিপত্তি ঘটেছে জেলার ঐতিহ্যাবহী ও সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নোয়াখালী সরকারি কলেজের নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত পোশাক নিয়ে।
জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে শুরু আনন্দ শোভাযাত্রা। কিন্তু আনন্দ শোভাযাত্রার সম্মুখ সারিতে দেখা যায়, একজন মেয়ে জামা ও হিজাবের সঙ্গে পুরুষের লুঙ্গী এবং একজন ছেলে শার্টের সঙ্গে লুঙ্গি পরেছেন।
এমন সাজসজ্জা ও পোশাকের কয়েকটি ছবি কলেজের পাবলিক ফেসবুক গ্রুপগুলোতে এবং ব্যক্তিগত আইডিতে এ ছবি পোস্ট করেন শিক্ষার্থীরা। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক কমেন্টবক্সে রীতিমতো হাস্যরস ও সমালোচনার জন্ম দেয়।
কমেন্ট বক্সে দেখা যায়, কলেজের সাবেক ও বর্তমান অনেক শিক্ষার্থীরা বাংলা নববর্ষ উদযাপনে এমন সাজকে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও বাংলা নববর্ষকে অপমান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তারা বলছেন, নববর্ষের শোভাযাত্রায় লাঙল, কাস্তে, হালখাতা এসবের প্রদর্শনী ছিলো না। অথচ একজন মেয়েকে জামা ও হিজাবের সাথে লুঙ্গী পরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা একটি অদ্ভুত সংস্কৃতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আবার একটি ছেলেকে শার্টের সাথে লুঙ্গি পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ শার্ট আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি নয়। এছাড়াও নববর্ষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গাওয়া হয় হতাশা ও বেদনার আক্ষেপের সুরের দেশাত্মবোধক গান।
গত ৯ এপ্রিল নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এবং নববর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/সুমাইয়া/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আনন দ শ ভ য ত র নববর ষ র অন ষ ঠ কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সিডনির ঐতিহাসিক টাউন হল যেন পরিণত হলো এক রঙিন উৎসবের মঞ্চে। ঝকঝকে আলোর ঝলকানি, দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা আর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে আসা অতিথিদের পদচারণে মনে হচ্ছিল এ যেন কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। অথচ এটি ছিল ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ ফুটবলের ড্র অনুষ্ঠান, যেখানে এশিয়ার সেরা নারী ফুটবল দলগুলোর ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছিল।
বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দরজা খোলার আগেই টাউন হলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন নানা দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের হাতে নিজ নিজ দেশের পতাকা, পরনে ঐতিহ্যবাহী পোশাক। অস্ট্রেলিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া, জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, ফিলিপাইন, ইরানসহ ১১টি দেশের ফুটবল দলের প্রতিনিধি, অধিনায়ক বা কোচের কেউ না কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব ফুটবলের এই মিলনমেলায় সবাই নিজ দেশের নাম উজ্জ্বল করতে এসেছেন। কিন্তু এই আলো ঝলমলে মঞ্চে ছিলেন না বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের কোনো প্রতিনিধি।
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব ফুটবলের এত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন হলো, অথচ বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি নেই—এটা মেনে নেওয়া যায় না, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এখানে এসেছিলাম আমাদের মেয়েদের দেখতে, নিজেদের দেশের জার্সি গায়ে দেওয়া তারকাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম।সাঈদ ফয়েজ, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী ও ইভেন্ট সংগঠকঅথচ এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস গড়ার বছর। এই প্রথম বাংলাদেশের মেয়েরা এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু সেই গৌরবময় মুহূর্তে, যখন বিশ্ব ফুটবল পরিবার সিডনিতে একত্র, তখন মঞ্চে অনুপস্থিত বাংলাদেশ। না কোনো ফুটবলার, না কোচ, না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কোনো কর্মকর্তা। এই অনুপস্থিতি ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং বেদনাদায়ক, কারণ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের তারকা খেলোয়াড়সহ অন্যান্য দেশের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। তাঁরা ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনে নিজেদের দেশকে তুলে ধরেছেন, আর স্মৃতির ক্যামেরায় ধরে রাখছেন ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের জায়গাটিতে খাঁ খাঁ শূন্যতা।
ভারত নারী দলের মিডফিল্ডার সংগীতা বাসফোর ড্র–তে বাংলাদেশের নাম তোলেন