অভিষেকে ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) রাঙিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। লাহোর কালান্দার্সের বাংলাদেশি লেগ স্পিনার প্রথম ম্যাচে পেয়েছিলেন ‘গেম চেঞ্জার’ –এর খেতাব।
দ্বিতীয় ম্যাচেও ২২ বছর বয়সী রিশাদ ধরে রাখলেন নিজের ধারাবাহিকতা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে এবারও তার শিকার ৩ উইকেট। করাচি কিংসের বিপক্ষে ৬৫ রানের ব্যবধানে জয় পাওয়া ম্যাচে রিশাদ ২৬ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট। যেখানে ছিল ১৪ ডট বল। ২টি করে চার ও ছক্কা হজম করেছেন। বাকিটা সময় তার দু্যতি ২২ গজ হয়ে উঠছিল অন্যরকম।
প্রতিপক্ষের মাঠে আগে ব্যাটিং করতে নেমে লাহোর ৬ উইকেটে ২০১ রান করে। ব্যাটিংয়ে রিশাদ ৩ বলে ২ রান করে রানআউট হন ইনিংসের শেষ বলে।
বোলিংয়ে আসেন অষ্টম ওভারে। প্রথম বলেই মেলে সাফল্য। তার সোজা ডেলিভারীতে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন শান মাসুদ। বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে যায় উইকেট কিপার বিলিংসের গ্লাভসে। তার আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে লাহোর পায় সাফল্য।
ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদ পেয়ে যান আরো একটি উইকেট। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ইরফান তার ফ্লাইট ডেলিভারীতে এগিয়ে এসে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন। টাইমিংয়ে গড়বড় করে লং অনে ক্যাচ তোলেন। সেখানে ডার্ল মিচেল সহজ ক্যাচ নিয়ে রিশাদকে দ্বিতীয় উইকেটের স্বাদ দেন।
পরের ওভারে রিশাদের ঝুলিতে আরেকটি উইকেট যোগ হয়। আব্বাস আফ্রিদি তার বল টার্ণের বিপরীতে খেলতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন। তাতে ২ ওভারে রিশাদের বোলিং ফিগার ছিল এরকম, ২-০-৪-৩। মনে হচ্ছিল পরের ওভারগুলোতেও একই ধার থাকবে। কিন্তু স্পেলের পরের দুই ওভারে যথাক্রমে ১১ ও ১২ রান দিয়ে কিছুটা আড়াল হয়ে যান। তবুও দলের সেরা বোলার হয়েছেন তিনি।
রিশাদের মতো ৩ উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদিও। তবে রান খরচ করেছেন ৩৪। তার বোলিং ইকোনমি ছিল ৮.
৬ উইকেট নিয়ে রিশাদ এখন পিএসএলে বোলিং তালিকায় সবার ওপরে। ২ ম্যাচে ৮ ওভারে ৫৭ রানে ৬ উইকেট পেয়েছেন রিশাদ। ৬ উইকেট পেয়েছেন আরেক লেগ স্পিনার আবরার আহমেদও। ৭৫ রানে ১২.৫০ গড় ও ৯.৩৭ ইকোনমিতে আবরার ৬ উইকেট পেয়েছেন।
তিন ম্যাচে দুই জয় পাওয়া লাহোর নিজেদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ২২ এপ্রিল মুলতান সুলতান্সের বিপক্ষে।
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট প য় ছ ন ৬ উইক ট ৩ উইক ট র ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক
রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।
চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে।
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা, কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ