ধূপখোলা মাঠ দখল করে চলেছে বৈশাখী মেলা
Published: 16th, April 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) কোনো অনুমতি ছাড়াই রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকার ধূপখোলা মাঠে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সরকারি এ জমিটি দখল করে স্থানীয় ‘ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব’ এর উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা এ মেলার কারণে সরকারি এ জায়গা দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী জনসাধারণের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মেলাটি গত ৬ এপ্রিল শুরু হয়। চলবে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত চলবে। বৈশাখী মেলা সাধারণত তিনদিনের বেশি হয় না। কিন্তু সেখানে টানা ১৩ দিন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজকরা জায়গার বিনিময়ে স্টল মালিকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফি আদায় করছেন। মেলার পুরো মাঠ দখলের কারণে ওই এলাকার বাসিন্দারা হাঁটাহাটি, ব্যায়াম এবং খেলাধুলার মতো দৈনন্দিন কার্যকলাপে অংশ নিতে পারছে না।
আরো পড়ুন:
দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে মেয়র পদে শপথ: ইশরাক
প্রথম কার্যদিবস
বস্তিবাসী ও হরিজনদের প্রতিনিধির সঙ্গে সভা ডিএনসিসি প্রশাসকের
সরেজমিনে দেখা গেছে, শতাধিক স্টলে বিভিন্ন পণ্যে বিকিকিনি চলছে। পাশাপাশি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বেশ কয়েকটি রাইডও রয়েছে। ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব নামে একটি স্থানীয় স্পোর্টস ক্লাব এ মেলার আয়োজন করেছে। ক্লাবটির দাবি, মেলাটি তাদের কার্যক্রমের জন্য তহবিল সংগ্রহের একটি মাধ্যম।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা কাওসার বলেন, “এটি আমাদের একমাত্র খোলা মাঠ। প্রতিদিন শত শত মানুষ এখানে হাঁটতে, ব্যায়াম করতে এবং খেলতে আসে। এখন পুরো মাঠটি মেলার দখলে চলে গেছে। শিশুদের খেলার জায়গা নেই। রাতে শব্দ, উজ্জ্বল আলো এবং সাউন্ড সিস্টেম অসহনীয়। মাঠে এভাবে অননুমোদিত ব্যবহার ভবিষ্যতে আরো বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।”
স্থানীয় কিশোর সাদিব, সে মাঠে নিয়মিত ফুটবল খেলে। সে জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে সে খেলতে পারছে না। তাদের অনেকেই খেলা বন্ধ করে দিয়েছে। কোথাও খুব বেশি খোলা জায়গা নেই। এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হলে তারা কোথায় যাবে, প্রশ্ন সাদিবের।
প্রয়োজনীয় অনুমোদন সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্লাবের সদস্য সচিব এবং ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বলেন, “এ মাঠটি ইস্ট অ্যান্ড ক্লাবের, তাই মেলা আয়োজনের জন্য সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। আমরা বছরের পর বছর ধরে এখানে মেলা আয়োজন করে আসছি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এটি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা আবার এটি শুরু করেছি। আমরা ডিএমপি এবং সিটি কর্পোরেশন উভয়ের কাছে আবেদন করেছি। ডিএমপি আমাদের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু ঈদের ছুটির কারণে সিটি কর্পোরেশন কোনো সাড়া দেয়নি।”
সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন ছাড়া মেলা আয়োজন করা বৈধ কিনা- এ প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে গেছেন।
ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপ-সচিব) কায়সার মোহাম্মদ ফারাবী বলেন, “ধুপখোলা মাঠে মেলা আয়োজনের জন্য আমরা কোনো অনুমতি দেইনি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
মেলার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, “জমি অনুমোদনের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। আমরা কেবল নিরাপত্তার বিষয়টি দেখি। আয়োজকরা ডিএমপি কমিশনারের কাছে আবেদন করেন, নিরাপত্তার অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, ভূমি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। যদি সিটি কর্পোরেশন মেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করব।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসস স র জন য ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ