কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে পানিসম্পদ প্রকল্পের একটি কার্যালয় স্থাপনে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের চিকনারকান্দি গ্রামের মো. আল এমরান।

তিনি জালিয়াতির জন্য একই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল করিম বাদল, তাঁর দুই ভাই মো.

আব্দুল কাদির ও সালাউদ্দিন সোহেলকে দায়ী করেছেন। 

লিখিত অভিযোগে এলাকায় ফজলুল করিম বাদল, তাঁর ভাই মো. আব্দুল কাদির ও সালাউদ্দিন সোহেলের পরিচিতি ভূমিদস্যু হিসেবে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, তিনজনের বিরুদ্ধে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে দুটি মামলা চলছে। 

আল এমরানের অভিযোগে বলা হয়েছে, আদমপুর লাউড়া মৌজার ৩০৪ নম্বর খতিয়ানের ২২৪৭ নম্বর দাগে অবস্থিত ওই তিন ভাইয়ের ৬ শতাংশ জমি ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর ২৫২৪ নম্বর দলিলমূলে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরাধীন পানিসম্পদ প্রকল্পের জন্য লিখে দেওয়া হয়। দলিলে প্রকল্পটির নাম ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরাধীন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সিলেট ফরিদপুর এলাকাধীন ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ প্রকল্প’ লেখা। জাইকার অর্থায়নে প্রকল্পের কার্যালয়ের জন্য জমিটির দলিল করা হয়।

কিন্তু দলিলে যে জায়গার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে না করে কার্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে একই মৌজার আরএস ২২৩৬ দাগের সরকারি জমিতে। ফজলুল করিম বাদল ও তাঁর ভাইয়েরা সরকারি খরচে পাকা প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করে দোকান তৈরি করেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগতভাবে এসব দোকানের ভাড়াও তুলছেন। অথচ ওই জায়গাটি গরু-ছাগলের হাট। সরকার এখান থেকে প্রতিবছর ৪০ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়ে আসছিল। ওই কার্যালয়ের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে।

আল এমরানের ভাষ্য, ফজলুল করিম বাদল ও তাঁর ভাইয়েরা প্রভাবশালী। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না। চেয়ারম্যান থাকাকালীন বাদল জাইকা কার্যালয়ের জন্য বাজারের জমি দখল করেন। তাদের দান করা জায়গা নিজেদের দখলেই রয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল করিম বাদলের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলে তিনি ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও উত্তর মেলেনি। মোবাইল ফোনে অষ্টগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলশাদ জাহান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ প রকল প র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ