ঈদে শেকড়ের টানে শহরের মানুষ গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরে যায়। এটা চেনা দৃশ্যপট। সেই পটভূমিকে অবলম্বন করে একটি পরিবারের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে নাটক ‘তোমাদের গল্প’। ঈদের দিন সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলে এটি প্রচার হয়েছে। এতে রাতুল চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান। সাধারণ গল্পের এক অসাধারণ নাটকটি ১৬ দিনে ১৩ মিলিয়নের বেশি মানুষ দেখেছেন। নাটকটি দর্শক সাড়ায় উচ্ছ্বসিত এই অভিনেতা।

দর্শকের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে জোভান বলেন, ‘তোমাদের গল্প’ নাটকটি দর্শক সাড়ায় আমি অভিভূত। ইউটিউবে নাটকটি দেখে ভালোলাগার কথা বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। সিনেমার অনেক অভিনেতাও কাজটির প্রশংসা করেছেন। দর্শক আসলে ভালো গল্পের নাটক দেখতে চায়, এটি বারবারই প্রমাণ হচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই বেশি মন্তব্য পাচ্ছি। যারা নাটকটি দেখছেন, কোনো না কোনো মন্তব্য করছেন। নাটকের অভিনেতা হিসেবে চেষ্টা করছি, দর্শকের ভালোবাসার জবাব দেওয়ার। স্ক্রিনশর্ট নিয়ে স্টোরিতে পোস্ট করছি। দর্শকের এ ভালোবাসা আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। যারা কমেন্ট করছেন, তারা ভাববেন না যে আমরা মন্তব্যগুলো দেখিনি। সবার মন্তব্যই দেখি। ব্যস্ততার কারণে অনেকের মন্তব্যের জবাব দিতে পারিনি।’

নাটকে যুক্ত হওয়া ও কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে জোভান আরও বলেন, ‘নির্মাতা মুহম্মদ মুস্তাফা কামাল রাজ ভাই এ নাটকটি পরিকল্পনা করেছেন ছয় মাস আগে। এটি একটি যৌথ পরিবারের গল্প। অনেক কাস্টিং জড়িত। সবার সঙ্গে নির্মাতা আলাদাভাবে বসেছেন। স্ক্রিপ্টে অনেক কারেকশন হয়েছে। এমনটি সেটে গিয়ে বদল হয়েছে স্ক্রিপ্ট। নির্মাতার কথা একটু আলাদা করে না বললেই নয়, শুটিংয়ে সবসময় সিন ধরে ধরে কাজ করেছেন। কিছু জায়গায় এমন সব কারেকশন দিয়েছেন, যে কারণে তাঁকে ধন্যবাদ দিতে বাধ্য হয়েছি। কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছি ভালো গল্পের নাটকে কাজ করতে। গল্পে যেন শিক্ষণীয় কিছু থাকে। ভুল সবারই হয়। এটি সত্যি যে, ক্যারিয়ারের শুরুতে মানহীন অনেক গল্পে কাজ করেছি। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে পরিণত করার চেষ্টা করেছি।’

জোভানের কথায়, ‘এই ঈদে পারিবারিক গল্পের নাটকটি দর্শকের পছন্দ হয়েছে। আগামী ঈদে একই ধাঁচের গল্পে যদি কাজ করি, সেটা দর্শকের নাও ভালো লাগতে পারে। একটি দৃশ্যে দেখা যায় আমি দাঁড়িয়ে আছি, সবাই কবর জিয়ারত করে চলে যাচ্ছে। ওই সিনে একা দাঁড়িয়ে থেকে আব্বা বলে ডাক দিয়েছি। ওই ডাকটি দর্শক বেশ পছন্দ করেছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটি আমি অনুভব করে ডেকেছি। মনে হয় এ রকম একটি সময়ে যদি আমি থাকতাম তাহলে কী করতাম। এটি আমার পছন্দের একটি দৃশ্য ছিল।’

এই অভিনেতা বলেন, ‘নাটকটিতে কাজ করতে গিয়ে প্রচুর রিহার্সেল করেছি। একটি দৃশ্য একটেকে নেওয়া হয়েছিল। এটি শিল্পীর জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। মিঠু [মনিরা মিঠু] আপাকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ, তাঁর জন্য আমার অভিনয় অনেক ভালো হয়েছে।’

‘শুধু তোমাদের গল্প’ নয়, প্রতিবারের মতো একাধিক নাটক দিয়ে দর্শকদের সামনে আসেন জোভান। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর অভিনীত ‘হৃদয়ের এক কোণে’সহ একাধিক নাটক ট্রেন্ডিংয়ে ছিল। নিজের কাজের বাইরেও ঈদে একাধিক কাজ দেখেছেন জোভান। সিনেমা হলেও ঢুঁ মেরেছন।

নানা ব্যস্ততার ফাঁকে সিয়াম আহমেদের অভিনীত ‘জংলি’ সিনেমাটি দেখেছেন তিনি। বন্ধু সিয়ামের অভিনীত এ সিনেমাটি নিয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল অনেক দিনের। জোভান একা নয় তাঁর সঙ্গে স্ত্রী সাজিন আহমেদ, অভিনয়শিল্পী সাফা কবির, মুমতাহিনা টয়া, সৈয়দ জামান শাওনসহ অনেকেই ছিলেন। অভিনয়ের শুরুটা একসঙ্গে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই পথচলাটা। পরে হয় বন্ধুত্ব। সিনেমা দেখে ১০-এ কত দেবেন বন্ধুকে?

এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি সিয়ামকে তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য ১০-এ ৯ দেব। সিনেমাটি দেখে সাফা, টয়া, শাওন তাদের চোখেও পানি এসেছে। আমি ও আমার স্ত্রীর কান্না পেয়েছে। দর্শকদের অনুভূতিকে ধরতে পারা, এটা ভালো অভিনয়ের মাধ্যমেই সম্ভব। এবার সত্যি বলতে নতুন এক সিয়ামকে পর্দায় দেখেছি। সিয়ামকে বন্ধু হিসেবে নয়, একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে এ রেটিং দিয়েছি। চরিত্র নিয়ে সে অনেক পরিশ্রম করেছে। পর্দায় তাঁকে দেখে আমি বুঝেছি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন টক অভ ন ত ক জ কর কর ছ ন ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন

ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে। 

ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ। 

মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ