বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট থেকে অধ্যাপক মুহসিনকে অব্যাহতি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
Published: 18th, April 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীনকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, মুহসিন উদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র অধ্যাপক, যিনি জুলাই আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের একজন। তাঁকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে অব্যাহতি দেওয়া সম্পূর্ণ অনিয়ম ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিজ আল জাহাঙ্গীর বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীন আমাদের পক্ষে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও ব্যক্তিগত আক্রোশপ্রসূত। তিনি নিজেই পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, তখন অব্যাহতি দেওয়া যেত। এখন দেওয়া মানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা।’
ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আতিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘উপাচার্য আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাদের শিক্ষককে যদি মূল্যায়ন করা না হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’
প্রসঙ্গত, ১৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিনের নির্দেশে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নোটিশে অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীনের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের দোসরসহ নানা অভিযোগ তুলে তাঁকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এর আগে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন। ওই সময় উপাচার্যের বাসভবনে সিন্ডিকেট সভা চলছিল। সভায় উপস্থিত না থেকে অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীন শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেন এবং উপাচার্য সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।
মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।