খুলনায় পুলিশ ও সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, আটক ৪
Published: 18th, April 2025 GMT
খুলনায় ডিবি পুলিশ ও সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় চার যুবককে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর বয়রা আজিজের মোড় এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক ভাড়াটিয়ার ছিনিয়ে নেওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, খুলনা সিটি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মাসুদ রানা, বাগেরহাট পিসি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়সাল মাহমুদ, সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ অনার্স শেষ বর্ষের মোঃ সালাউদ্দিন এবং একই কলেজের রিফাত পারভেজ রাফি।
ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া ইফতেখার জানান, তিনি অনলাইনে ক্রিপ্টো কারেন্সির ব্যবসা করেন। রাতে চারজন প্রথমে ডিবি পরিচয়ে তার ঘরে ঢোকে। তাকে একটি ঘরে আটকে মারধর করতে থাকে এবং অনলাইনে জুয়ার কারবারি হিসেবে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করে। এ সময় ওই চারজন নিজেদের ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দেন। তিনি বলেন, টাকা দিতে না পারায় আলমারি থেকে আমার স্ত্রীর স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয়। হঠাৎ লোকজন চলে আসলে আমি বেঁচে যাই।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ আহমেদের বাড়িতে অনলাইনে জুয়া খেলা হচ্ছে এমন অভিযোগে চার যুবক সেখানে প্রবেশ করে। কিছু সময় পর মারধরের শব্দ পেয়ে আমরা বাড়িতে প্রবেশ করি। তখন ভাড়াটিয়ার কাছে অভিযোগ শুনে ওই চারজনকে আটকে রেখে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিই।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার হুমায়ুন আহমেদ বলেন, তারা প্রথমে ডিবি পরিচয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। পরে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বাড়ির লোকজনকে মারধর করে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মালামালসহ তাদের আটক করে।
তিনি বলেন, তারা একেক সময়ে একেক ঠিকানা বলছে। তাদের সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।