পৃথিবীর কেন্দ্র উত্তপ্ত হলেও সমুদ্রের তলদেশ হিমশীতল কেন
Published: 18th, April 2025 GMT
বিশাল সাগর-মহাসাগরে রয়েছে প্রাণবন্ত এক প্রাণের জগৎ। সমুদ্র যত গভীর হয়, ততই ভিন্ন জগৎ দেখা যায়। সমুদ্রের গভীরতা বেশি হলে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না। ফলে তাপমাত্রা থাকে হিমাঙ্কের কাছাকাছি আর পানির চাপ থাকে অনেক বেশি। আর তাই সেখানে সাধারণ প্রাণীর পক্ষে টিকে থাকা অসম্ভব।
অন্যদিকে পৃথিবীর কেন্দ্র প্রায় ৬ হাজার ৪০০ কিলোমিটার গভীরে অবস্থিত। বলা যায়, পৃথিবীর কেন্দ্র একটি প্রজ্বলিত অগ্নিগোলক। সেখানে তাপমাত্রা প্রায় ৫ হাজার ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গলিত লোহা ও নিকেলের উত্তপ্ত কেন্দ্র পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করে। পৃথিবীর অভ্যন্তর উত্তপ্ত আর সমুদ্রের তলদেশ ঠান্ডা হওয়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর গঠন, তেজস্ক্রিয় পদার্থ ও তাপ স্থানান্তরের জটিল প্রক্রিয়ার রহস্য।
আরও পড়ুননিজের অক্ষে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি কাত হয়ে ঘুরছে পৃথিবী, কেন২৭ নভেম্বর ২০২৪পৃথিবীর অভ্যন্তরে থাকা পদার্থ ক্রমাগত ভাঙনের ফলে কেন্দ্র এখনো উত্তপ্ত। ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো তেজস্ক্রীয় আইসোটোপ সেখানে ধীরে ধীরে ভেঙে শক্তি নির্গত করছে, যা পৃথিবীর অভ্যন্তরকে উত্তপ্ত রাখে। এই তাপ ধীরে ধীরে বাইরের দিকে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে সমুদ্রের উপরিভাগ সূর্যের আলোর মাধ্যমে উত্তপ্ত হয়। পানির তাপ পরিবাহিতা কম হওয়ার কারণে এই উষ্ণতা খুব বেশি গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। গভীর সমুদ্রের পানি মূলত মেরু অঞ্চলের বরফ গলা পানি ও শীতল স্রোতের মাধ্যমে আসে, যার কারণে সেখানে হিমাঙ্কের তাপমাত্রা দেখা যায়। প্রাকৃতিকভাবে পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপ ও সমুদ্রের গভীরের শীতলতার বিপরীতমুখী শক্তি পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপ ও জীববৈচিত্র্য বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভ্যন্তরের তাপ টেকটোনিক প্লেটের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুনএক সেকেন্ডের জন্য পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হলে কী হতে পারে০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪পৃথিবীর এমন রহস্যময় ভারসাম্যের অনেক রহস্য এখনো আবিষ্কার করা যায়নি। আর তাই বিজ্ঞানীরা এখনো পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপপ্রবাহের সঠিক পরিমাণ ও গভীর সমুদ্রের স্রোতের জটিল গতিপথ জানার চেষ্টা করছেন।
সূত্র: ওশেন এক্সপ্লোরার ও আর্থ অবজারভেটরি সিঙ্গাপুর
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।