গ্রীষ্মকাল চলছে। গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি ও খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায়। ফলে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, পানিশূন্যতা ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এ সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান ও খনিজসমৃদ্ধ পানীয় গ্রহণ করা উচিত। কিছু স্বাস্থ্যকর পানীয়র তালিকা দেওয়া হলো, যা গরমে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে।

পানি

সবচেয়ে সহজলভ্য ও দরকারি পানীয় হলো পানি। এটি শরীরের তাপমাত্রা ও লবণপানির ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। এই গরমে দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। তবে পানি হতে হবে বিশুদ্ধ ও স্বাভাবিক তাপমাত্রার।

কাঁচা আমের জুস

কাঁচা আমে ভিটামিন সি, এ এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা রোগপ্রতিরোধ–ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। কাঁচা আমের জুস শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য রক্ষা করে ও ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে।

ডাবের পানি

ডাবের পানি প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইট–সমৃদ্ধ, যা পানি ও পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করে। এটি শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তবে কিডনির রোগীদের ডাব খেতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

ফলের রস

তাজা ফল, যেমন বেল, আনারস বা তরমুজের রস গরমে উপযোগী। দোকানের বা চিনিযুক্ত জুস পরিহার করে বাড়িতে তৈরি করে নিন। আলাদা চিনি বা লবণ না মেশানোই ভালো। এগুলো ভিটামিন এবং মিনারেল–সমৃদ্ধ, যা শরীরের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করে।

লেবুর শরবত

লেবুর শরবত ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ এবং শরীরকে তরতাজা করে। লেবুর শরবত শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে এবং শরীরের রোগপ্রতিরোধ–ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সহায়ক।

দই বা ঘোল

ঠান্ডা দইয়ের ঘোল বা লাচ্ছি গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়ক। দই ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি–সমৃদ্ধ, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। এ ছাড়া দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। দই বিভিন্ন ফল, বাদাম বা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এর পুষ্টিগুণ বাড়ে।

শসার পানি

শসা প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা ও হাইড্রেটিং। শসার পানীয় তৈরি করতে শসা কেটে পানিতে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এটি শরীর ঠান্ডা রাখতে ও ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক।

তোকমার শরবত

এটি শরীর ঠান্ডা রাখে, হজমে সহায়তা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

ডিটক্স ওয়াটার

শরীর ঠান্ডা রাখতে ঘরেই শসা, লেবু ও পুদিনাপাতা দিয়ে বানিয়ে নিন ডিটক্স ওয়াটার। পুদিনাপাতা ও লেবুমিশ্রিত এই পানীয় ওজন কমাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি হজমশক্তি বাড়ায় ও শরীর ঠান্ডা রাখে। এ ছাড়া যেকোনো ফল দিয়ে বানানো ডিটক্স ওয়াটার স্টিল বা কাচের পাত্রে বানাবেন। প্লাস্টিকের জারে না বানানোই ভালো। ডিটক্স ওয়াটার একসঙ্গে বেশি পরিমাণে না পান করে সারা দিনে অল্প অল্প পান করুন। বানানোর পর ডিটক্স ওয়াটার ফ্রিজে রেখে দিন। বেশিক্ষণ বাইরে রাখলে খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে।

লাজিনা ইসলাম চৌধুরী, পুষ্টিবিদ, পিপলস হাসপাতাল, মালিবাগ, ঢাকা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহ য ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ