ভুলবশত বা সতর্কতার অভাবে ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হয়ে গেলে তা কিন্তু শঙ্কার কারণ। এআই প্রযুক্তির কল্যাণে দাপুটে ডিজিটাল দুনিয়া যেন প্রতিদিনই অবাধ্য রূপ ধারণ করছে। অনেক সময় পুরোনো ফোন বিক্রি বা বদলের সময় ঘটতে পারে এমন বিপত্তি। অনেকেই অবশ্য এটি স্বজ্ঞানে করেন না। ঘটে বিশেষ গুরুত্বের অভাবে।
কিছুদিন আগে ঈদ উৎসবে অনেকে নতুন স্মার্টফোন কিনেছেন। অনেকে আবার পুরোনো ফোন হাতবদল বা বিক্রি করে থাকেন।
পুরোনো ফোন বিক্রির আগে বা বদলে নেওয়ার আগে বিশেষ সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। যদি নিজের ব্যক্তিগত তথ্য থেকে অন্য়সব প্রয়োজনীয় কনটেন্ট বাছাই করে ডিলিট না করেন, তাহলে কিন্তু বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয় যায় না। সবার আগে মুছে ফেলতে হবে ব্যাংকিং ও তার ক্যাশ মেমোরি। নিজের স্মার্টফোনে অনেকের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংক লেনদেনের তথ্য সংরক্ষিত হয়। তাই যে কোনো ডিভাইস বদলে নেওয়ার আগে সেসব তথ্য জরুরি ভিত্তিতে মুছে ফেলা প্রয়োজন।
ডিভাইস বিক্রির আগে সেটিংস অপশনে গিয়ে সব ডেটা মুছে ফেলতে হবে। সম্ভব হলে সব অ্যাপ ডিলিট করে ফেলবেন।
অ্যাপ থেকে ই-ব্যাংকিং করলে ফোন থেকে সব ধরনের ‘হিস্ট্রি’ মুছে ফেলতে হবে। অর্থ বিনিময়ের কিছু তথ্য বেহাত হলে তা প্রতারক চক্রের নাগালে চলে যেতে পারে, যা ফেলতে পারে অপ্রত্যাশিত ঝামেলায়। সুতরাং নিজের সোশ্যাল আইডি, পাসওয়ার্ড বা ব্যাংকিং (ক্রেডিট/ ডেবিট) কার্ডের গোপন তথ্য সব সময় সুরক্ষিত করতে হবে, অন্যথায় ঘটতে পারে বিপত্তি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।