অবিলম্বে নারীবিষয়ক সুপারিশমালা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ রোববার জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা পবিত্র কোরআনের বিধানের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক এবং ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের অস্তিত্বের ওপর একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। এসব প্রস্তাবের মাধ্যমে দেশের ধর্মীয় ভারসাম্য, পারিবারিক কাঠামো ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে নারী অধিকার রক্ষায় বিশদ সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করাসহ ৪৩৩টি সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিল ও নারী-পুরুষকে সমান সম্পত্তি দেওয়ার সুপারিশের বিষয়ে গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন মূলত আল্লাহর নির্ধারিত উত্তরাধিকার বিধান দ্বারা রচিত। এটিকে বাতিল করার অর্থ সরাসরি কোরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া।

সুপারিশমালায় থাকা সব ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব সম্পর্কে বিবৃতিতে বলা হয়, এটি বাস্তবায়ন করা হলে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সবাইকে ধর্মীয় পারিবারিক বিধান থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি ধর্মহীন কাঠামোয় আসতে বাধ্য করা হবে। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার চরম লঙ্ঘন।

এতে আরও বলা হয়, দেশের ইসলামিক স্কলাররা মনে করেন, ইসলাম নারী-পুরুষের মর্যাদা সমান মনে করলেও, তাদের ভূমিকায় প্রাকৃতিক পার্থক্যকে স্বীকার করে। তাই ‘নারী-পুরুষের পারিবারিক ভূমিকাকে অভিন্নভাবে দেখার’ প্রস্তাবটি ইসলামী সমাজব্যবস্থাকে বিকৃত করার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।

আরও পড়ুননারীর জন্য ৩০০ সংরক্ষিত আসন, বিয়ে-তালাক, উত্তরাধিকারে সমান অধিকার দেওয়ার সুপারিশ ১৯ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ব ষয়ক স ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ