চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত ১০
Published: 23rd, April 2025 GMT
চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
জানা যায়, চট্টগ্রামে কয়েকদিন ধরে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। চলতি মাসে অন্তত তিন হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়। এতে মরিয়া হয়ে ওঠেন চালকরা। বুধবার নগরের বাহির সিগন্যাল এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন তারা। এসময় পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে চালকরা পিছু হটেন। তারা সড়ক ছেড়ে অলি-গলিতে অবস্থান নেন। সেখান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন। পুলিশও তাদের ধাওয়া দিলে তারা গলির ভেতরে ঢুকে যান রিকশাচালকরা। এসময় ব্যস্ততম আরাকান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও উপস্থিত রয়েছে।
জানতে চাইলে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ইজি বাইক সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার আহ্বায়ক আল কাদেরী জয় সমকালকে বলেন, ‘আজ আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু কয়েকদিনের অভিযানে কয়েক হাজার ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক জব্দ করা হয়েছে। এটি তো শ্রমিকদের জীবিকা। তাই ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মরিয়া হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এটার একটা সুরাহা হওয়া উচিত। নগরে অন্তত দেড় লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক আছে। কিন্তু এগুলো কোথায় চলতে পারবে, কীভাবে চলতে পারবে তার কোনো নীতিমালা নেই। পুলিশ যেখান থেকে পারছে, ধরে নিয়ে যাচ্ছে, চালকদের হয়রানি করছে। এটাতো হতে পারে না।’
এ বিষয়ে কল করা হলে চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘এখন কথা বলার পরিস্থিতি নেই। আমরা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি।
আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি।
তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।
আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।
তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনেন তারা।