বিসিএসের সিলেবাস যুগোপযোগী করতে পিএসসির নতুন উদ্যোগ
Published: 24th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) জানিয়েছে, বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস আধুনিক ও সময়োপযোগী করতে কাজ চলছে। আগামী ৪৯তম বিসিএস থেকেই এই নতুন সিলেবাস কার্যকর হবে।
এ লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার সিলেবাস সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং তা বিশ্লেষণ করে এমন একটি সিলেবাস তৈরি করা হবে, যাতে বাংলাদেশের প্রার্থীরা বৈশ্বিক পরিসরে নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করতে সক্ষম হন।
পিএসসি আরো জানায়, কমিশনকে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম। এ সময় পিএসসির বর্তমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
৪৬তম বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম বলেন, ব্যর্থ হলেও তা তুলে ধরব। বাতিল করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ নেই। সিআইডি ঘটনাটি তদন্ত করছে। যদি কেউ শনাক্ত হয়, তাকে বাতিল করা হবে। চাকরি হয়ে গেলেও বহিষ্কৃত হবেন। পুরো পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিইনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ালেও পিএসসির কাছে ভেরিফাই করে নেবেন। গুজবে চাপ তৈরি হয়।
মোবাশ্বের মোনেম বলেন, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে পিএসসি জট কমিয়ে আনবে। আগামী ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে জট খোলার অগ্রগতি দেখা যাবে। এ জন্য কোনো পরীক্ষা পেছাতে চাইছি না।
পিএসসি চেয়ারম্যান, বিজি প্রেসে আর বিসিএসের প্রশ্ন আর ছাপা হচ্ছে না। গত বছরের ৫ আগস্টের আগে ছাপা সব প্রশ্ন নষ্ট করেছি। মডারেশনে ছিল এমন প্রশ্নও নষ্ট ও বাতিল করেছে। মডারেশন বাসায় নয়, পিএসসির অফিসেই করা হচ্ছে।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসস র ব স এস পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।