পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ, যাত্রীদের সতর্ক করল ভারতের দুই বিমান পরিবহন সংস্থা
Published: 25th, April 2025 GMT
পাকিস্তান ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার পর যাত্রীদের সতর্ক করা হয়েছে। ভারতের প্রধান দুই বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো বলেছে, ফ্লাইটের পথ পরিবর্তনের কারণে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সময়সূচি প্রভাবিত হতে পারে। আর এ কারণে ‘বিকল্প দীর্ঘ পথ গ্রহণ’ করতে হতে পারে তাদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এ আশঙ্কার কথা জানায় এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিমান সংস্থা দুটি যাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, যাত্রা শুরুর আগে তাঁরা যেন ফ্লাইটের সময় ও সূচি যাচাই করে নেন। একই সঙ্গে তারা এ–ও বলেছে, পাকিস্তানের এ সিদ্ধান্তে বিকল্প পথ ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই।
এয়ার ইন্ডিয়া বিবৃতিতে বলেছে, ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যগামী কিছু ফ্লাইটে এর প্রভাব পড়তে পারে। এসব গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচলে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এই অসুবিধার জন্য যাত্রীদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। বিকল্প পথ ব্যবহার করা ছাড়া আমাদের করার কিছু নেই।
পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না পারায় অসুবিধার জন্য যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইন্ডিগো। বিমান সংস্থাটি বলেছে, হঠাৎ করে পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে এর প্রভাব পড়েছে। এতে করে যে অসুবিধা হচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি। যাত্রীদের দ্রুততম সময়ে কীভাবে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।
গত মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীরা হামলা চালান। এতে ২৫ ভারতীয়সহ ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করে বুধবার প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত।
ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ গতকাল বেশ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাল্টাপাল্টি এসব পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
কাশ্মীরে হামলার কারণে সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার দেশে ফেরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফেরার পথে মোদিকে বহনকারী উড়োজাহাজ পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে যায়। তখনো পাকিস্তান ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয়নি। এ ঘটনাকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ল র জন য পদক ষ প ফ ল ইট ব কল প
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।