থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনইএসসিএপি) ৮১তম অধিবেশনে বাংলাদেশ একটি তাৎপর্যপূর্ণ কূটনৈতিক জয়লাভ করেছে। আঞ্চলিক সহযোগিতায় ক্রমবর্ধমান নেতৃত্ব প্রদর্শন করে বাংলাদেশ ইউএনইএসসিএপির অধীন মর্যাদাবান দুটি আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং কাউন্সিলের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেনিং সেন্টার অন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট (এপিসিআইসিটি) ও এশিয়া-প্যাসিফিক সেন্টার ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব ডিজাস্টার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্টের (এপিডিআইএম) গভর্নিং কাউন্সিলে তিন বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। ইউএনইএসসিএপির ৮১তম অধিবেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আর বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সহসভাপতি নির্বাচিত হন।

উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ভিডিও ভাষণ প্রচার করা হয়। ভাষণে তিনি সব ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করার আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণের নীতির ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন বিশ্ব গড়ার আহ্বান জানান। তিনি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

গুরুত্বপূর্ণ এই অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো.

শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গভর্নিং কাউন্সিলের নির্বাচন ও বিষয়ভিত্তিক অধিবেশনের বাইরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ইউএনইএসসিএপির নির্বাহী সচিবের সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশগ্রহণ করে। বৈঠকে আইসিটি উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা জোরদারসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর আলোচনা করা হয়।

এই দুটি নির্বাচনী বিজয় এ অঞ্চলে বাংলাদেশের প্রভাবশালী নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান আস্থার প্রতিফলন। দুটি আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং কাউন্সিলের নির্বাচনে মূল্যবান সমর্থনের জন্য সব সদস্যরাষ্ট্রের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে। খবর-বাসস

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহয গ ত উপদ ষ ট র জন য গভর ন

এছাড়াও পড়ুন:

মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে

দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর নগরী বুসানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে কফিন। দেশটিতে ভবিষ্যতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পরিচালকদের প্রশিক্ষণের জন্য এগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ফলে মৃত্যুর ব্যবসায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোক কাজ খুঁজে পাচ্ছে। কারণ দেশটিতে জন্মহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ৫০ বা তার বেশি।

বুসান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাপড়ে সাবধানে একটি পুতুল জড়িয়ে, কাপড়টিকে আসল চামড়ার উপর মসৃণ করে, তারপর আলতো করে কফিনে নামিয়ে দিচ্ছিল।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রশাসনের শিক্ষার্থী ২৭ বছর বয়সী জ্যাং জিন-ইয়ং বলেন, “আমাদের সমাজের বয়স বাড়ার সাথে সাথে, আমি ভেবেছিলাম এই ধরণের কাজের চাহিদা আরো বাড়বে।”

আরেক ছাত্র, ২৩ বছর বয়সী ইম সে-জিন তার দাদীর মৃত্যুর পর মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়।

তিনি বলেন, “তার (দাদীর) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আমি দেখেছি পরিচালকরা তাকে শেষ বিদায়ের জন্য কতটা সুন্দরভাবে প্রস্তুত করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞ বোধ করছি।”

দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ ক্রমশ একাকী জীবনযাপন করছে এবং নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যাচ্ছে। এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির প্রায় ৪২ শতাংশ এখন একাকী জীবনযাপন করে।

এই পরিসংখ্যান দেশটিতে একটি নতুন পেশার আবির্ভাবকে প্রতিফলিত করছে।

উন্নত দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। এই ‘একাকী মৃত্যু’-তে সেইসব ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত যারা আত্মহত্যা করেছেন।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যবসায়ের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি কিম ডু-নিয়ন বলেন, তার ২০ বছর বয়সী ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছে।

তিনি বলেন, “মানুষ যখন একসাথে থাকে, তখন তারা জিনিসপত্র ভাগ করে নেয়... এমনকি যদি একজন ব্যক্তি মারা যায়, সেই জিনিসপত্রগুলি থেকে যায়। কিন্তু যখন কেউ একা মারা যায়, তখন সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে।”

তবে নিজের পেশা নিয়ে ভয়ও পান কিম।

তিনি বলেন, “আমি ভয় পাচ্ছি। আপনি যতই প্রস্তুতি নিন না কেন, একজন মৃত ব্যক্তির মুখোমুখি হওয়া ভীতিকর।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে