ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার পর যাত্রীদের সতর্ক বার্তা দিয়েছে দেশটির দুই উড়োজাহাজ সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো। তারা বলেছে, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে ‘বিকল্প দীর্ঘ পথ গ্রহণ’ করতে হতে পারে। ফলে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সময়সূচি প্রভাবিত হতে পারে।

বৃহস্পতিবার এক্সে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এ আশঙ্কার কথা জানায় এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো। 

এয়ার ইন্ডিয়া বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যগামী কিছু ফ্লাইটে এর প্রভাব পড়তে পারে। এসব গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচলে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এই অসুবিধার জন্য যাত্রীদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। বিকল্প পথ ব্যবহার করা ছাড়া আমাদের করার কিছু নেই।’

পৃথক বিবৃতিতে ইন্ডিগো বলেছে, ‘হঠাৎ পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে এর প্রভাব পড়েছে। এতে যে অসুবিধা হচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পারছি। যাত্রীদের দ্রুততম সময়ে কীভাবে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।’

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

গত ২২ এপ্রিলের হামলায় পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা দাবি করে ওই ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার কঠোর বার্তার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত।

পরে ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে- ভারতের নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ বেশ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাল্টাপাল্টি এসব পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সূত্র-এনডিটিভি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদক ষ প ফ ল ইট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ