৫ আগষ্টের পর ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদ পালিয়ে গেলেও  হুমায়ুন এখন যুবদল নেতা পরিচয়ে বন্দর রূপালী ও আমিন আবাসিক এলাকায়  বাসা বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে স্থানীয়রা চরম ভাবে  অতিষ্ঠ হয়ে উঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে ।  

রুপালী আবাসিক এলাকায়  মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন ভাড়া বাড়িতে  ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে মারধর ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে  হুমায়ুন ও তার সন্ত্রাসী  বাহিনী। এ ঘটনায় কথিত যুবদল নেতা হুমায়ুনকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলার করেছেন  ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন।

জানাগেছে,  উপজেলা কলাগাছিয়া ইউপি মাদবপাশা এলাকার মৃত আব্দুল আলীর ছেলে মহিউদ্দিন বন্দর রূপালী আবাসিক এলাকায়   পাঁচ শতাংশ জমির উপরে একটি  টিনসেড দৌচালা বসত ঘর রয়েছে।

গত  ৫ আগস্টের পর হাসিনা দেশ ত্যাগের পর বন্দর আমিন আবাসিক এলাকার নিজামউদ্দিনের ছেলে হুমায়ুন যুবদল নেতা পরিচয়ে ১০/১২ জনকে নিয়ে  মহিউদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে  নগদ  ৫ লাখ টাকা ও প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা  চাঁদা দাবি করে।  পরে মহিউদ্দিন হুমায়ুনকে নগদ ৫ হাজার টাকা দেন, এবং  যুবদলের অফিস খরচ বাবদ প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।  

এর ধারাবাহিকতায় গত  ১৭ এপ্রিল রাতে হুমায়ুনের নেতৃত্বে ১০/১২ জন রুপালী গেইট আবাসিক এলাকায় ওই বাড়িতে  প্রবেশ করে মহিউদ্দিনের ছোট ভাই  বাহাউদ্দিন (৫৫) কে মারধর ও ভাংচুর ও লুটপাট করে নগদ ৫০ হাজার টাকা লুটে নেয়। দাবীকৃত  চাঁদার ৫ লাখ টাকার হুমকি দমকি দিলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে  তারা পালিয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানান, আওয়ামীলীগের শাসনামলে থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ এ  এলাকায় চাঁদাবাজি সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ ছিলো সাধারণ মানুষ ।

৫ আগষ্টের পর ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদ পালিয়ে গেলেও হঠাৎ হুমায়ুন যুবদল নেতা পরিচয়ে ১০/১২ জনের একটি বাহিনী গড়ে তুলে বন্দর রূপালী ও আমিন আবাসিক এলাকায় বাসা বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। হুমায়ুন ও তার বাহিনীর অত্যাচারে   অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বাসা বাড়ির মালিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সাধারণ মানুষ ।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় হুমায়ুনসহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ য বদল ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাক

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান হবে আশা করা যায়। নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়ে দুই পক্ষই নীতিগতভাবে একমত হয়েছে যে ২০২৬ সালের রোজার আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। 

সাম্প্রতিক কালে নানা বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বের বিরোধ লক্ষ করা যাচ্ছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি–দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যু সেই বিরোধকে আরও বাড়িয়ে দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সর্বশেষ বৈঠকে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করে।

কিন্তু ঈদুল আজহার আগের রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার ব্যাপারে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায়। এর আগে বিএনপির নেতৃত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে। 

এমনই একটি পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের সময় লন্ডনে তাঁর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বৈঠকের ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়টি সামনে এলেও দুই পক্ষের আলোচনা কেবল এর মধ্যে সীমিত ছিল না। প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সংস্কারের ধারাবাহিকতার ওপরও জোর দেন তঁারা। 

বৈঠকের ফলাফলকে প্রায় সব দলই স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণার ধরন নিয়ে আপত্তি জানালেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সরাসরি বিরোধিতা কেউ করেনি। আমরাও মনে করি, কোনো বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ দেখা দিলে আলোচনার মাধ্যমেই তা সমাধান করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ যারা সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে। লন্ডন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার ও বিচারকাজ দৃশ্যমান করার ওপর জোর দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে দেশে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরাগমন না ঘটে, সে জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কাজটি ত্বরান্বিত করা জরুরি। আবার অপরাধ করে যাতে কেউ পার না পায়, সে জন্য জুলাই-আগস্টের হত্যার বিচারও অপরিহার্য। কিন্তু এই দুটি বিষয়কে কোনোভাবে নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা সমীচীন হবে না।

যেসব সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে নির্বাচন ও সংবিধানের বিষয়টি জড়িত নয়, সেগুলো সরকার নির্বাহী আদেশেও বাস্তবায়ন করা যায়। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে তেমন বাধা আসার কথা নয়। তবে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার অর্থ এই নয় যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করাই বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক দলগুলোর সার্বিক সহযোগিতা না থাকলে সরকার একা কাজটি করতে পারবে না। 

ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্দলীয় ও আন্তদলীয় সংঘাতের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে না চললে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না। আমরা আশা করি, দিন-তারিখের বিষয়ে সমঝোতার পর নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। রাজনীতিতে মত ও পথের পার্থক্য থাকবে; তাই বলে একে অপরকে ‘শত্রুজ্ঞান’ করার পুরোনো সংস্কৃতি থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ